statcounter

Tuesday, May 31, 2016

মাসিমা ব্যস্ত আছি

মাঝে মাঝে ই এটা বলতে ইচ্ছে করে। 

বাসে উঠলাম, জানলার ধারের দুর্লভ সিট ও পেলাম।এখন কাজ  কি কম---- জানলা দিয়ে রোজকার সেম রাস্তাঘাট দ্যাখা, হোর্ডিং পড়া--- বিজ্ঞাপনে নায়ক নায়িকার মুখের ছবি , গয়নার অ্যাডে চাকতির সাইজের হারের ডিজাইন দেখে রাখা--- তা ছাড়া ফুচকার দোকান, রোল কর্নার আরো বিভিন্ন খাবারের দোকান--- তাতে লোকের ভীড় এসব ও দর্শনীয়। এইসব করতে করতে বোর হয়ে গেলে ব্যাগের মধ্যে গল্পের বই আছে, সেটা পড়া যায়। তাতে ও খুশি না হলে, বাসের অন্যানরা কি বলছে, কার নিন্দা করছে--- গরমেন্টের নাকি সিপিয়েমের ৩৪ বছরের, নাকি নিজের বসের কিংবা বসের বৌয়ের, তা শোনো। মাঝে মাঝে ফোনে ঝগড়া করে কেউ কেউ, সেটা তো ভীষণ ইন্টারেস্টিং।  আর এই সব কিছুতে যদি মন না থাকে---- মাথা প্রচন্ড ভার কিংবা ভীষণ হাল্কা তাই কিছুই ঢুকবেনা কন্ডিশন তখন জানলা দিয়ে ব্ল্যাঙ্কলি বাইরে চেয়ে থাকো, দিব্যি আরাম।

কিন্ত ু সবার কি সব সুখ সহ্য হয় !! পাশে এসে বসলেন মধ্যবয়স্কা এক মাসিমা। মাত্র মিনিট পাঁচেক আগে এক জনের বাজারের থলি থেকে জ্যান্ত হাঁস বেড়িয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল, বাস সুদ্দ হৈ হৈ, হাঁসের মালকিন স্মার্ট মহিলা--হাঁসকে পাকড়াও করে এমন ভাবে ব্যাগে পুড়লেন তাতে বোঝা গেল রীতিমত এক্সপিরিয়েন্সয়ালা। বানিয়ে বলছি না, সত্যি নিজের চোখে দেখা কান্ড। এই সব দেখে মন ভাল হয়ে যেতে হ্যারি পটার খানা ব্যাগ থেকে বের করেছি, অমনি পাশে মাসিমার আসন গ্রহন। আগে সহযাত্রী লেখায় বলেছি আমার গোবেচারা মুখের প্রস অ্যান্ড কনস। এবার ও সেরকম কিছু হল হয়ত।

মাসিমা একা ছিলেন না, আরেক মাসিমা ছিল। তার সঙ্গে উচ্চস্বরে বাক্যলাপ চালিয়ে যখন বোরড হয়ে গেলেন আমার দিকে নজর পড়লো মাসিমার।

কোথায় নামবে??  বললাম। সেটাই হল কাল।
আমি ও তো ওখানে নামবো। সম্ভাব্য প্রতিবেশীর সঙ্গে বাসে আলাপ হয়ে উদ্ভাষিত মুখ।
কোথায় থাকো?? তাও বলতে হল। এবার মিলল না। মাসিমা একটু দূরে থাকেন কিন্ত ু আমার বাড়ির   পাশে মরনিং ওয়াক করেন---সুগার আছে কিনা।
চাকরি কর বুঝি। বই পড়তে ভালবাস... আমার বৌমা ও সারাদিন বই পড়ে।  খুব ভাল অভ্যাস। ----বলতে থাকলেন মাসিমা।

হ্যারি পটার হাতে ধরাই রইল, বই এর দিকে তাকিয়ে রইলাম, মাসিমা কিন্ত ু  কোনো হিন্ট নিলেন না।
বাস ও ছুটছে, মাসিমার মোনোলগও।

মনে মনে বহুবার বললাম --- মাসিমা ব্যস্ত আছি।
মুখে বলতে পারলাম না। কবে পারব কে জানে!!!

1 comment: