statcounter

Sunday, February 26, 2017

শনিবার

লাল পাথর বিছানো রাস্তা, এবাড়ী থেকে ওবাড়ী যাবার। কয়েক বছর আগে রাস্তাটা সাদা ছিল।  রাস্তার পাশে সার সার গাছ। । ছড়িয়ে আছে ঝড়ে পড়ে যাওয়া শুকনো গাছের গুঁড়ি। শালের গাছে এসেছে ন্তুন পাতা। কৃষ্ণচূড়ার গা বেয়ে উঠেছে বড় বড় পাতাওলা পরগাছা।  মাঝে মাঝে গজিয়ে আছে  নয়নতারার ঝাঁক। টবের মধ্যে পাতাবাহার, একটু এগিয়ে ক্যান্টিনের সামনে একটা নাম না জানা গাছ, তাতে  শীতের শেষে ফুটবে হালকা বেগুনী রঙের  ফুল। পালকের মতো নরম; গোছায় গোছায় ঝরে পড়ে থাকবে রাস্তার ওপরে। পলাশের গাছে যেন আগুন লেগে গেছে। কৃষ্ণচূড়ায় আসবে আসবে করছে লাল- হলুদের বাহার।
লাল রাস্তায় পড়ে আছে শুকনো পাতা, পায়ে লেগে মচ-মচ করে উঠছে। শনিবার রাস্তায় ঝাঁট পড়ে না। চারপাশে কেও কোথাও নেই, এমনকি কুকুর ছানাগুলোও বেপাত্তা।  একটা কোনো পাখির আওয়াজ আসে।  ল্যাবের বাইরে নেশালাগানো ঝিমধরা দুপুর। আস্তে আস্তে রোদ নেমে আসে। ওয়ার্কশপের পাশে ল্যাবের ওপরে লাল রঙের অস্তগামী সূর্য।
আমাদের এরকমই ভালো লাগে। শান্ত, অলস, ব্যস্ততাহীন, অগোছাল চারপাশ। ধুলোজমা বারান্দার রেলিং,নীচে পড়ে থাকা না ব্যবহার সাইকেল। ডাঁই হয়ে থাকা ভাঙ্গা চেয়ার-টেবিল, বড়-বড় কাঠের বাক্স। অনেক আগের ভেঙ্গে যাওয়া ফোয়ারা, ইটের উপরে ইট সাজিয়ে বানানো হয়েছিল গোল বসার জায়গা; সব ঢেকে গেছে আগাছায়। কেয়ারী করা বাগান ভরে গেছে বড় বড় ঘাসে, তাতে সেপ্টেম্বরের শেষে প্রজাপতির ঝাঁক খেলা করবে। তার এখনো অনেক দেরী। এখন আমগাছ ভরে উঠেছে মুকুলে,তাতে বিকেলের মরা আলোতে উজ্জ্বল হলুদ আভা। এখন সব কিছু অগোছাল মায়ায় ভরা মতন, আনমনা। ছাদের উপরে ট্যাঙ্কির কল থেকে টপ টপ করে পরা জলের ফোঁটার মত আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে সময় বয়ে যায়। পাশে বসে থাকা মুখ বদলে যায়, শুধু শনিবারের দুপুর স্থির হয়ে থাকে,বছরের পর বছর।



Thursday, February 2, 2017

বইমেলা ২০১৭

বইমেলা যখন ময়দানে হত, হাতে গুনে দু-তিন বার গেছিলাম। বইমেলা তারপর চলে এল বাইপাসের কাছে, মাঝের এক বছর সল্টলেকে হল। কাছে হয়ে যেতে আমি নাচতে নাচতে গেলাম। স্কুল- কলেজে বই কেনার থেকে বই দেখাটাই বেশী হত। পড়ার জন্য লাইব্রেরী ভরসা। তবে বইমেলার কল্যাণে বার্ষিক বই কেনার একটা ব্যাপার ছিল।
তারপরে বই কেনার ফ্রীকুএন্সি বেড়েছে (পড়ার কতটা বেড়েছে জানি না)। সারাবছর বাড়ীতে বসে ইন্টারনেটে বই কেনা হয়। বইমেলার উপরে নির্ভরতা কমেছে। কাজের ব্যস্ততা ও বেড়েছে।  মেলায় যেতে  বইপ্রেমী বা হুজুগে সঙ্গীরও দরকার হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন কারণে তিন বছর আগে লাস্ট বইমেলায় যাওয়া হয়েছিল।

এবছর না ছিল কাজের ব্যস্ততা। আর "এবছরে না হলে আসছে বছর তো আছে" সেই নিশ্চয়তা কমে এসেছে। তাই দু- তিন দিন ধরে যাচ্ছি- যাচ্ছি করে শেষমেষ ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দুপুরবেলা মেলায় উপস্থিত হলাম।
উদ্দেশ্য দুটি---- বই দেখা আর বাংলা বই কেনা।ঘন্টা তিনেকে যা যা দেখলাম তার সংক্ষিপ্তসারঃ

১) রাশি রাশি বইয়ের স্টল---যেরকম থাকে। অনেকগুলোই প্যাভিলিয়নের মধ্যে ভাগ করা। ভীড় আছে তবে থিক থিকে ভীড় নয়। পছন্দ মতো বই হাতে নিয়ে দেখা যাচ্ছে।
২) লোক সঙ্গীত হচ্ছে দুটো জায়গায়, সবাই দাঁড়িয়ে শুনছে।
৩) থিমঃ কোস্টারিকা। সেখানে সেলফি তোলার ভীড় জমেছে।
৪)  বড় বড় ড্রামে খাবার জলের প্যাকেট রাখা আছে।তাছাড়া ফুড কোর্ট আর অন্যান্য খাবারের দোকান তো আছেই।
৫) মেইন অডিতে নবনীতা দেবসেন এবং "সই" এর মেম্বাররা এসেছেন--সবাই নিজের লেখা পাঠ করছেন। হল যদিও প্রায় ফাঁকা।
৬) ছবি-কার্ড- আর অজস্র টুকিটাকি (মায় কানের দুল) বিক্রী হচ্ছে।

আরো ঘটনা ঘটছিল , তবে বই দেখা- কেনার চক্করে ভালো করে লক্ষ্য করতে পারিনি।

বাকি ছবি দিলামঃ
দিনাজপুরের কান্তজী মন্দিরের অনুকরণে বানানো

লোক গান হচ্ছে

সই এর সভা

পট আঁকা হচ্ছে



 লুটোপুটি করে কেনাকাটি
এখন কাকে ছেড়ে কাকে আগে পড়বো সেটা নিয়ে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে।