statcounter

Friday, January 6, 2017

ডায়রি

লাল রঙের ডায়রি ছিল। আর ডায়রি লেখার অভ্যাস ছিল। রোজ নয়, মাঝে মাঝে। খুব অস্থির লাগছে, চিন্তাগুলো কিছুতেই বাগ মানছে না, এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে, তখন খাতা কলম  নিয়ে বসা ছাড়া গতি ছিল না।
একটা একটা করে শব্দ জুড়ে যখন একটা লাইন তৈরী হবে, লাইনের পর লাইন জুড়ে প্যারাগ্রাফ, তার বিষয়বস্ত ু  যতই অকিঞ্চিতকর হোক না কেন, প্রসেসটার মধ্যে মনকে শান্ত করে দেবার অসামান্য ক্ষমতা আছে। সেটা আরো বুঝলাম যখন অসুখ হয়ে  আগের বছর একদম গৃহবন্দী দশা হল। ডাইরি  থেকে ব্লগে উত্তীর্ণ হলাম। ডাইরি  হচ্ছে একদম নিজস্ব, যা নিজেকেও বলতে ভয় পাচ্ছি, তা লিখে রাখা যায়। আর এদিকে ব্লগ হচ্ছে ঠিক তার উলটো।যা ভাবছি সব কিছু উজাড় করে প্রকাশ করাই এর উদ্দেশ্য।  কিছু লিখলে তারপরেই পেজ ভিঊ এর গুনতি শুরু। কিন্তু আমরা কি সব কিছু যা ভাবছি তা বলে উঠতে পারি? কোনটা বলব আর কোনটা রেখে দেব মনের ভেতরে এই দোলাচলই কি কেটে যায়না অনেকটা সময়।
 আমি লিখছিনা বেশ কয়েকদিন হল। এমন নয় যে তার আগে আমি দীর্ঘ সময় লিখেছি, কিন্তু যেটুকু সময় ব্লগ লিখেছি সেটা রেগুলার ছিল। আমি লিখছি না কারণ এখন আমার মাথায় আর কিছু আসছে না। তার মানে কি যে আমার জীবনে ঘটনার অভাব ঘটেছে? তা কিন্তু নয়। বরং আমার ব্লগের সমস্ত লেখা হয়েছে যখন, তখন বাহ্যিক ভাবে  আমার সারাদিন বাড়িতে শুয়ে থাকে ছাড়া কোন কাজ ছিলনা।  যদিও আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম। ব্যস্ত ছিলাম নিজের রাগ, দুঃখ আর ভয় থেকে পালাতে, সাইটোটক্সিক ওষুধের রিয়্যাকশন থেকে নিজেকে আলাদা করতে। আর তখন সেই পালানোর এক মাত্র মাধ্যম ছিল এই ব্লগ। যা মনে এল তাই লিখলাম, জাস্ট লিখে গেলাম---- আর আমার মধ্যের চলতে থাকা অবিরাম অশান্ততাগুলো আস্তে আস্তে মিলিয়ে যেতে লাগল।
আজকে আমার সত্যি কিছু লেখার নেই।
বছরের সাথে সাথে আমিও বদলে যাচ্ছি, আমার চারপাশটাও বদলে যাচ্ছে, আমার চাওয়া পাওয়াগুলো ও ন্তুন হয়ে যাচ্ছে। তা নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। শুধু এই শব্দ সাজানোর আনন্দটার স্বাদ যেন বদলে না যায়, এই কামনাই করি।