statcounter

Tuesday, September 27, 2016

How cancer altered my relationships with people

It was a perfect day, more perfect than I had hoped for. It was the 14th of Feb, and for the first time ever in my life I received a bunch of red roses. The submission of my doctoral thesis was due in a month's time, and marriage was a couple of months away. So everything seemed beautiful and happy. And just then, I found a painless solid lump in my breast. The doctor ran some tests and it was found to be a malignant tumor. Cancer--- it was what I was having, something which is one of the most dreadful things one can ever imagine to happen to them.

The first few visits to the cancer hospital were surreal. Everyone was worried and panicked but I was unresponsive. A part of me was always denying the disease and trying to trivialize the danger and imminent struggle. In the hospital they ran a few other tests and discussed the treatment plan with us. With these, things around me started to change, and it changed so fast that it seemed difficult for me to keep pace. Being diagnosed with cancer was only the tip of the iceberg in terms of the changes I have encountered in the last seven months. As time passed the constant battle with cancer became real and draining. There were many thing that underwent transformations in the course of the treatment and recovery. Among those some were temporary while the other were permanent. The way I look and think, perceive and judge, identify and troubleshoot changed. Altered were my perceptions of strength and bravery, ideology and conscience. But of all the changes, the one which affected me the most was my changed relationships with the people I knew, and with the ones I never had a chance to know.  

The huge burden of hospital bills was shared by my friends, seniors, colleagues and strangers. My family and my yet to be family stayed with me through the hurricane of cancer treatment.   My friends and my Ph.D supervisor  accompanied me in my hospital visits. They sat through my chemotherapy and surgery, kept me company whenever I felt alone and patiently listened to my relentless complaints. People who were away and could not come to visit me remained in touch through chat, skype and phone. They remembered the date of my chemotherapy sessions and kept my morale high. People kept a tab on my treatment and recovery. Friends whom I had lost connection with long back came forward to help me. There were calls, messages, mails from people with whom I barely had talked or knew. Some of my long lost classmates contacted me and sent me positive energy. A very senior colleague called me before my first chemotherapy, talked about her own experience and gave me courage. The support I was receiving was overwhelming. My struggle became their struggle, and their help and good wishes accelerated my recovery.

But in this period I have lost some people as well.

And through the funny game of losing and gaining, my perception of relationships has altered. I have re-assessed the relationships I have been endowed with biologically, and the alliances I have made. My experience with cancer showed how beautiful and strong friendship can be. How impregnable can human relationships be in the face of the unpredictability and fragility of our lives.


This is my cancer story. It tells how my relationships saved me from cancer. And how cancer strengthen my kinship with people. 

Tuesday, September 6, 2016

প্রশ্ন ১

আজকাল আয়নার দিকে চেয়ে থাকি।
নিজেই নিজেকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করে।
আগের মতন হয়ে যাচ্ছে সব--- আমার ভুরু চোখের পাতা
মাথায় ঘাসের প্রান্তর
কিন্ত্ু কোনো কিছুই আসলে আগের মতন  নয়।
এরা তো ছিল জীবনের তিরিশ বছর ধরে 
তখন আয়নার দিকে চেয়ে শুধু ভুলগুলো শুধরোতে চেয়েছি।
কুঁকড়ে ওঠা চুলকে সোজা করেছি, বেসামাল ভুরুকে বেঁধেছি শাসনে,
সুন্দর হতে চেয়েছি নিয়ম মেনে। 
কেমন করে ভালবাসা নিয়ে এরা বেড়ে ওঠে জানতে পারিনি।
এখন জানি---- কেমন করে সব যেতে দিতে হয়--
কিভাবে সব সাজ খুলে যায়, যখন বেজে ওঠে যুদ্ধ নাকাড়া।
তাই যখন এখন অনেক দিনের বিচ্ছেদের পরে
এরা ফিরে আসছে আমার কাছে,
মাটি ভেদ করে ওঠা গাছের মতন--- 
অনেক যত্ন, অনেক রোদ, আলো আর ভালোবাসা নিয়ে
তখন বিশ্বাস হয়না নিজেকে।
আজকাল আয়নায় নিজের দিকে চেয়ে থাকি।
আমার ভুরু চোখের পাতা চুল,
কেমন অচেনা মতন
জিজ্ঞেস করি তোমরা থাকতে এসেছ তো আমার শরীরে
নাকি দুদিনের বিশ্রাম; গাছতলায়!!!


Tuesday, August 16, 2016

টু রিড সেকশন


হুড়মুড় করে হ্যারি পটারের ৮ ন ং টা শেষ করে যখন হাঁপ ছাড়ছি, দেখলাম বুক শেলফের মধ্যে থেকে না পড়া বইগুলো আমার দিকে কটমট করে চেয়ে আছে। একে অন্যকে ঠেলাঠেলি করে বলছে এই যে এসে গেছে, তিড়ি ং বিড়িং করে কিনে সাজিয়ে রাখুনি। এই কথাটা শুনে যেই বুক সেলফে ধুলো ঝাড়ার নাটক করে কান পেতেছি, শুনি একদম কোণে সাজিয়ে রাখা ডরিস লেসিং এর বইটা তার পাশের মুরাকামিকে বলছে, "আরে ছোঃ--- খালি কিনলেই তো হয় না, পড়ার যোগ্যতা লাগে।" আর মুরাকামি ব্যাটা পুরো অকৃতজ্ঞের মতন সায় দিচ্ছে। স্পষ্ট শুনলাম পাশ থেকে ডালরিম্পেলের বইদুটো বিশ্রী ভাবে খ্যা খ্যা করে হাসছে।

ভেবেছিলাম দুটো সিনেমা দেখে শুয়ে থাকব। কিন্তু এইসব বাজে মন্তব্যে  হঠাৎ  করে রাগ হয়ে গেল।
চেঁচিয়ে বললাম, "আরে পড়ব না নাকি...না হয় বছর তিনেক আগে কিনেছি--- এখনো ঠিক সু্যোগ করে উঠতে পারিনি। আর পড়ছিনা তাতো নয়। এই আদিচিকে জিজ্ঞেস করে দেখ-- কিনে সঙ্গে সঙ্গে পড়ে ফেলেছিলাম কিনা।"

আদিচি বেচারা ভালোমানুষের মতন আমাকে একটু সাপোর্ট করতে যাবে-- অমনি আর কে নারায়ণ বলে উঠল "সঙ্গে সঙ্গে মোটেও নয়-- ৬ মাস পরে। আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারবে না।"

অমনি  বাকি  না পড়া বইরা চোখ পাকিয়ে নাক কুঁচকে আমাকে ধমকাতে শুরু করে দিল।
সব চেয়ে বেশি চেঁচালো এম অ্যান্ড বিগ হুম,  স্যালভেশন অফ আ সেন্ট আর রবীন্দ্র উপন্যাস সমগ্র । তাদেরকে তোল্লাই দিতে লাগল হেমিংওয়ের ফেয়ারওয়েল টু দ্য আর্ম আর কেন কেসির বইটা। এই দুটো বই কিছুটা পড়ে রেখে দিয়েছিলাম বলে ওদের খুব রাগ কিনা।

হঠাৎ করে বুক শেলফের মধ্যে একটা বিপ্লব শুরু হয়ে গেল। না পড়া বইরা পড়ে ফেলা বইদের কাছ থেকে পিটিশনে সাইন জোগাড় করতে লাগল।

নানা রকমের স্লোগান উঠল--- 

১) বছরের পর বছর ধরে বই কিনে না পড়ে রাখা চলবে না।

২) বইয়ের "রেড" লিষ্টে ঢোকার অধিকার মানতে হবে।

৩) বইয়ের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না। ইত্যাদি ইত্যাদি।

একদম নতুন আসা বইগুলো দেখলাম ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে, কেন ফলেটের বই ওদের বলছে--- "আগে আমরা ;বুঝেছিস।"

সব কান্ড দেখে আমার মাথা ঘুরছিল। আর বইদের দাবী কিছু ভুলও  নয়--তাই একটু গিল্ট ও ফিল হচ্ছিল। তখন এই হইচইয়ের মধ্যে শুনতে পেলাম লীলা মজুমদার রচনাবলী আমাকে বলছে, "যেগুলো আগে কিনেছ সেগুলো পড়ে ফেল না বাছা। ওদের কি সারাক্ষণ শেলফের মধ্যে থাকতে ভাল লাগে। তুমি পড়ছো এই ছুতোতে কি সুন্দর ওরা একটু ঘুরে বেড়িয়ে আসে।" 

এই চেঁচামেচিতে ভয় পেয়ে হঠাৎ করে উইন্ড আপ বার্ড ক্রনিকল কেঁদে ফেল্ল। আর বলে উঠল "পার্পল হিবিস্কাস ল্যাবে বেড়াতে গেছিল...আমার ও ল্যাব দেখতে ইচ্ছে করছে।" 

তখন আমি বইদের বল্লাম "ঠিক আছে বাবা----- এই মুরাকামিকে বের করলাম, আস্তে আস্তে তোমাদেরও নিয়ে যাব ল্যাবে। আর রাগ করতে হবে না।" পাকদন্ডী আর ম্যানস সার্চ ফর মিনিং আমার হয়ে বাকিদের কাছে খুব ক্যাম্পেন করতে শুরু করল। রবীন্দ্র উপন্যাস সমগ্রও ওদের কে সাপোর্ট করল। এতে বেশির ভাগ বই শান্ত হয়ে গেল। 

যদি ও  ডিসগ্রেস মুখ বেঁকিয়ে বলল-- "আই ডোণ্ট বিলিভ হার।" কেন কেসিও তাতে সায় দিল।
তবে বাকি বইরা হাসি মুখে মুরাকামিকে টা টা ক রল। এখন সে আমার সঙ্গে বিছানায় বসে আছে।

ভাবছি এবার সত্যিই " টু রিড" লিষ্টের বইগুলোকে পড়ে ফেলতে হবে। আর ওদের রাগানো যাবে না।




আমার রিড আর টু রিডের অনেকখানি



আপনাদের "টু রিডের লিষ্ট" কত বড় ?? বয়সে বা সাইজে!
বই  কিনে সঙ্গে সঙ্গে পড়ে ফেলেন নাকি আমার মত রেখে দেন ??


Thursday, August 4, 2016

ইভিনিং ওয়াক

ভোরবেলা উঠে মর্নিং ওয়াক যেতাম , আজ্ঞে হ্যাঁ, এই শর্মাই। তবে  বয়স তখন নিতান্তই কম, ক্লাস সিক্সের অ্যানুয়াল পরীক্ষার পরে ছুটিতে  পাড়ার কয়েকটা বন্ধু মিলে। দিন দশেক পরেই বুঝতে পারলাম এ আমার কাপ অফ টী নয়। কষ্ট করে সাত সকালে উঠার চেয়ে ঘুমুলে বরং কাজ দেবে, বন্ধ হয়ে গেল মর্নিং ওয়াক। এর পরে মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে আবার চেষ্টা করেছিলাম, সেম রেজাল্ট।

কাট টু খড়্গপুর।সেখানে যেটা হত তাকে নাইট ওয়াক বললেই ঠিক হয়। ডিনারের পরে ২.২ তে হাঁটতে বেরোনোর মজাই আলাদা ছিল। তখনো একা একা ঘুরে বেড়োনোর মানসিকতা তৈরী হয়নি, তবে কেউ না কেউ জুটেই যেত। বসের নিন্দা আর জীবনের ততকালীন কঠিনতম সমস্যাগুলোর সমাধান সুত্র খুঁজতে খুঁজতে রাত বেড়ে যেত, রাস্তা শেষ হয়ে হোস্টেলে পৌছে যেতাম । স্বাভাবিক ভাবেই কথা শেষ হত না, পরের হাঁটার জন্য তুলে রাখা হত।

একা একা হাঁটতে শুরু করলাম হোস্টেল থেকে ফিরে এসে। সন্ধ্যেবেলায় সল্টলেকের রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর মত ভাল স্ট্রেস বাস্টার আর কিছু ছিল না। খুব মন খারাপের সময় মনে হয় চার দেওয়াল আরো অসহ্য লাগে। দোকানের নিয়ন আলোর উলটো দিকে অন্ধকার বাড়ীগুলোর সামনের ফুটপাতের  উপরে শুয়ে থাকা কুকুরের পাশ কাটিয়ে, রাস্তার মোড়ে ত্রিফলা আলো আর ট্র্যাডিশনাল স্ট্রীট ল্যাম্পের নীচের আধো আলো- আধো অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে একা একা গন্তব্যহীন ভাবে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা।  যে এরকম করেনি সে বুঝবেনা। ছুটির দিনগুলোতে এরকম করতাম। মাঝে মাঝে হাঁটার শেষে পুলের পাশের মাঠে বসে থাকতাম।

নতুন বাড়ীতে এসেও মাঝে মাঝে এরকম করেছি। বাড়ী থেকে বাসরাস্তা, আবার ফিরে আসা।  ইদানীং শরীর খারাপ হয়ে সব বন্ধ হয়ে গেছিল। আজকে প্রায় পাঁচ মাস পরে পুরোনো সিলেবাস রিভাইজ করে  একগাদা পুরোনো কথা মনে পড়ে গেল, তাই লিখে ফেললাম।

আপনারা কি করেন--- একা একা হাঁটতে যান নাকি দলবল নিয়ে?
মর্নিং নাকি ইভিনিং??
নাকি এসবের বালাই নেই! আড্ডা হয়ে যাক।






Friday, July 29, 2016

ঢোলু

আজ থেকে ঠিক একমাস আগে প্ল্যাস্টিকের ব্যাগে চেপে ঢোলু এলেন। সাথে তেনার মর্মরহর্ম এবং মাস পাঁচেকের খাবার দাবার (ন্তুন জায়গায় যাচ্ছি, কি সাপ ব্যাং খেতে দেবে কি দরকার রিস্ক নিয়ে !)
দেবদত্ত বলে গেল সকালে বিকেলে চারটে করে লাল- হ্লুদ-সবুজ গুলি দেবে, আর মাঝে মাঝে জল চেঞ্জ। গুলির সংখ্যা এখন ছয়। এক মাস ধরে ঢোলুকে পর্যবেক্ষন করে যা যা বুঝলাম এই বেলা লিখে রাখছিঃ
১) প্রচন্ড কুঁড়ে---সারাক্ষ্ণ কি করে জলের নীচে গিয়ে ঘুমোয় কে জানে।
২) খাবার খেতে খুব নাটক করে। শুরুতে খেতে দিলেই টপাটপ খেয়ে ফেলত, এখন তাকে সাধ্যসাধনা করেও খাওয়ানো যায় না। খাবারগুলো কে পুরো খায়ও না, ছিবড়ে করে নিচে ফেলে রাখে।
৩) বু বু করে মুখ থেকে হাওয়া বের করে আর উপরে এসে জল খায়।
৪) খুব ভিতু। বাড়ীতে কেউ না থাকলে মরে যাবার অ্যক্টীং করে পড়ে থাকে।
৫) শব্দরসিক--- ওর কাছে বসে সবাই আড্ডা দিক বা গান চালাক বা নিদেন পক্ষে ঝগড়া ক্রুক--- ঢোলু নেচে কুঁদে একশা।
৬) ঘোরতর নার্সিসিস্ট, নিজেকে দেখতে ব্যস্ত। টোকিয়ো ( ঢোলুর খাবার) যদি জারের সাইডে ভাসে তবে তার দিকে যেতে যেতে যেইনা নিজের মুখখানির প্রতিবিম্ব দেখতে পেল অম্নি খাবার ছেড়ে লাফিয়ে নিজেকে দেখতে শুরু করে দেবে। তার পর ফিন নাড়িয়ে, বাদামী- নীলচে ল্যাজ খানি বাঁকিয়ে নানা রকম করে নিজের রূপদর্শন করবে অক্লান্ত ভাবে।
৭) পড়াশুনায় কোনো মন নেই। একদিন একটা পেন দিয়েছিলাম। দৌড়ে এসে (পরুন সাঁতরে) মারল এক ঢু । পরের দিন আবার পেন দিতে নো পাত্তা। পেনটা জল থেকে তোলার সময় ওর গায়ে একটু লেগেছিল (ইচ্ছে করে নয়রে), তার পর থেকে পেন দেখলে হয় মরার অ্যক্টীং অথবা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। আজকে একটা পেপার দিয়েছিলাম, চেয়েও দেখলনা।



পুওর ছবি---ভাগ্যিস ঢোলু দেখতে পাচ্ছে না। পারলে কক্ষনো এগুলো আপলোড করতে দিতনা।
ঢোলুর একা একা অসুবিধা হচ্ছে। কিন্ত ু ফাইটার ফিস কি আরেকটা মাছের সঙ্গে থাকতে পারে??? মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।


Tuesday, July 26, 2016

গত সপ্তাহে


জীবনের আল্টিমেট উদ্দেশ্য হল  বি হ্যাপি, বি কন্টেন্ট। এবার সবার খুশি থাকার হাজার কারণ হতে পারে। কেউ সাজুগুজু করে খুশি, কেউ আবার পাহাড়ে উঠে। কেউ দুপুরে ঘুমিয়ে, অথবা আপিসে প্রোমোশন পেয়ে, কেউ আপিস কেটে বেড়াতে গিয়ে। তবে ভাল ভাল খেয়ে মোর ওর লেস সবাই খুশি হয় ( অন্তত আমার আসেপাশে যারা আছে তারা তো হয়)। এর জন্য ভালো ভালো রান্না করে বাড়ীতে বসে খাওয়া যায়  আবার নাচতে নাচতে রেস্ট্যোর‍্যান্টে গিয়েও কাজটা সমাধা করা যায়।  প্রথমটা খুবই পরিশ্রম সাধ্য (আর আমি আর কই রান্না করি)। তাই দ্বিতীয়টাই বাছা হল। 

এদিকে আবার "সিক্রেট লাইফ অফ পেটস" রিলিজ করে হল থেকে চলে যাবে যাবে করছে; এটা দেখব বলে মাস চারেক ধরে ওত পেতে আছি। হাতে সময় খুব বেশী নেই, দুদিন বাদে অপরেশন হয়ে জানিনা কতদিন শুয়ে থাকতে হবে। সব মিলিয়ে একটা জ্রুরী অবস্থা। বুক মাই শো দেখে শো টাইম কনফার্ম করে খাবার দোকান খোঁজা হল। আর ঝটাপট প্ল্যান হয়ে গেল- -- দুপুরে বোম্বে ব্রাসারিতে লাঞ্চ, তার পর সিনেমা দেখে মলে ঘোরাঘুরি এবং বাড়ী ফিরে আসা।

পার্ক সার্কাস এর মুখে যে বিশাল মল হয়েছে, যাতে এতদিনে আমি বাদে কলকাতার সমস্ত লোক গিয়ে ঘুরে দেখে কেনাকাটি করে খেয়ে দেয়ে ফিরে এসেছে, সেখানে যেতে হল। এর আগে বহুবার সামনে থেকে বাস বা ট্যাক্সি করে হুস করে চলে গেছি , , কিন্তু ভেতরে ঢোকার দরকার পরেনি কোনোদিন। এবার এই সিনেমার কল্যাণে সেটা হল।

পাঁচ তলায় খাবারের দোকান। বেশ সুন্দর ছবি দিয়ে সাজানো। হলুদ রঙের কাঠের প্যানেল করা বড় বড় কাচের জানলা। ছবি ছাড়া দোকান সাজাতে ব্যবহ্ৃত হয়েছে পুরনো কাপ প্লেট হাতা খুন্তি থালা বাটি গ্লাস হামান দিস্তে নারকোল কুড়ানী ই্ত্যাদি।  ন্তুন দোকানে একটু পুরোনো ছাপ আনার চেষ্টাটা  দেখে মন ভালো হয়ে গেল।

খাবার দুরকম- বাফেট পাওয়া যায়, আবার আ-লা-কারতে ও। আমরা বাফেট নিলাম। একে বলা হয় ক্যান্টীন স্টাইল, কেন একটু পরে বোঝা গেল।
কাচের গ্লাসে এল স্যুপ--দেখতে দুধ দেওয়া চা এর মতন। তার সঙ্গে টা এল তন্দুরী চিকেন, পেঁয়াজ দেওয়া পনীর (পনীরকে টুকরে) , কারিপাতা দেওয়া মাছ ভাজা, চিকেন কাটলেট, বড়াপাও, মুড়ি-চানাচুর আর পেঁয়াজী। এর সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ, লেবু আর ধনে পাতার চাটনি। টা গুলো সব স্টীলের প্লেটে --এই হল গিয়ে ক্যান্টীন স্টাইল।



পনির আর তন্দুরী চিকেনটা অসামান্য ছিল--আমরা দুবার করে নিলাম। 

এই সব খেতে খেতে মেনকোর্স এসে গেল। ডাল, মাটন কিমা, গার্লিক নান , প্রন কারি,  বোম্বে স্টাইল   চিকেন বিরিয়ানি। এত ভাল মাটন কিমা আমি কখনো খাইনি, মুখে দিতেই গলে গেল যেন। বিরিয়ানি খেতে মশলা দেওয়া চিকেন ভাতের মতো, আমার ভালো লেগেছে। 
এখানের বাফেটের বিশেষত্ব হল খাবার আগে থেকে রান্না করে সাজিয়ে রাখা থাকে না, সব টেবিলে এসে দিয়ে যাচ্ছিল। আমার মত কুঁড়ের জন্য আইডিয়াল।






এরপর এল আইসক্রীম আর চকোলেট পুডিং। আর তিন রকম লজেন্স। খাবার শেষ করে বিল মিটিয়ে আমরা সিনেমা দেখতে ছুটলাম।



সিক্রেট লাইফ অফ পেটসঃ

ম্যাক্স হচ্ছে একটা জ্যাক রাসেল টেরিয়ার, যে থাকে কেটির সঙ্গে। ম্যাক্সের জীবন ভালোই কাটছিল যতদিন না কেটি নিয়ে এল ডিউককে।  দুটো মিলে হারিয়ে যাওয়া, না- পোষা জন্তুদের সিক্রেট সঙ্ঘঠনের হাতে পরা, ম্যাক্সের বন্ধুদের তাকে খুঁজতে বেরোনো, গল্পের শেষে সবার বাড়ী ফিরে আসা এই নিয়ে দেড় ঘণ্টার জমজমাটী মজা।


বইপত্রঃ

শপিং মলে চারদিকে খালি সেল সেল আর সেল। এই সব দেখে দিগবিদিক শূন্য হয়ে আমরা বেসমেন্টে নেমে গেলাম আর চারটে বই কিনে ফেললাম।
১) নবনীতা দেবসেন - গল্পসমগ্র ১
২) বানী বসু- মৈত্রেয় জাতক
৩) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথা
৪) সুপার থার্টি

আজকে আবিস্কার করলাম গল্পসমগ্র১ এর লাস্ট চারটে পাতায় কোনো প্রিন্ট নেই।


কলকাতা  স্কাইলাইন


সংগ অফ ইন্ডিয়া ঃ Song of India (a.k.a. Dracaena reflexa)ঃ

ঢোলুর পরে এটি আমার নতুন সঙ্গী, গিফটে পেয়েছি। নীল রঙের বো বাঁধা ঝুড়িতে চেপে তিনি এসেছেন, এখন আমার জানলায় বসে থাকেন। বৃষ্টিতে আস্তে আস্তে পাতা নড়ান আর খুশি থাকেন।












Monday, July 18, 2016

দয়াময়ীর গল্প

ঠিক রোজকার মত বড় ঘড়িতে তিনটে বাজলো, উঠে বসলেন দয়াময়ী। ঘুম আজকাল এমনিতেই আসেনা। তাও শুয়ে থাকলে একটু বিশ্রাম হয়, আর সারা রাত জেগে বসে থাকাটা ভাল দেখায় না। পাশে অঘোরে ঘুমচ্ছে লীলা, তাতো ঘুমুবেই, সারাদিন কম পরিশ্রম তো করে না।

দরজা খুলে আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেলেন দয়াময়ী। বারান্দার পাশ দিয়ে খিড়কি দোর, তার নীচে ধাপে ধাপে সিঁড়ি নেমে গেছে পুকুরে। অন্ধকারে স্থির হয়ে আছে জল। ঘাটের কাছে শ্যাওলা পড়েছে। কিছুক্ষন জলের দিকে চেয়ে বসে রইলেন তার পর ডুব দিলেন জলে।

ঠান্ডা জল, শান্ত। কি শান্তি। সারাদিনের মধ্যে এই সময়টারই অপেক্ষায় থাকেন তিনি। সাঁতার ভালোই জানেন। ছোটবেলায় গঙ্গায় কেটেছেন। দুতিন বার ডুব দেবার পরে জলের নীচে আবছা মতন কি যেন দ্যাখা গেল। বড় করে নিঃশ্বাস নিয়ে জলের নীচের দিকে যেতে লাগলেন দয়াময়ী। কি যেন আছে পড়ে। না না একি দেখছেন । লীলা তো বিছানায় শুয়ে ছিল, এই মাত্র দেখে এসেছেন। এ কে লীলার মত। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল দয়াময়ীর, তাড়াতাড়ি উঠে এসে হুড়মুড়িয়ে ঘরের দিকে ছুটলেন তিনি। কি দেখবেন জানেন না, ভগবান যা দেখলাম যেন সত্যি না হয়। ঘরে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দেখেন বিছানায় অঘোরে ঘুমোচ্ছে লীলা। না ঘুমিয়ে মাথাটা গেছে। কি দেখতে কি দেখি। নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজের উপরেই রাগ ধরে যায়।

সকাল হয়েছে। প্রতিদিনের মতোই স্কুলে দৌড়ালো লীলা। রিক্সা করে স্টেশন, তার পর ট্রেন। প্রায় ১ ঘন্টার রা্স্তা। স্কুলে দিনে ৫ টা ক্লাস, তারপর পরীক্ষার প্রশ্ন বানাও, খাতা দেখ, হাজার কাজ। বাড়ির কাজ সকালে বিনু মাসিই দেখে, তাই রক্ষা।  

সন্ধ্যেবেলা। আবার এসেছে দাড়িওলা ছেলেটা নাম সুজন। চা খেয়ে লীলার সঙ্গে বসে গল্প করছে। দেখে গা জ্বলে যায় দয়াময়ীর।  সুজন না কুজন। এই রোগাপানা চাল চুলোহীন ছেলেটার সাথে লীলার কিসের এতো ভাব ভেবে পাননা। না আছে টাকা ,না আছে রূপ, না বাপ মায়ের খোঁজ। ভাবলে মাথা ঝন ঝন করে তার। তিনি যতদিন আছেন বিয়েটা কোনো ক্রমে আটকে আছে, চলে গেলে ওই বুড়ী ধাড়ী মেয়ে এর গলায় মালা দেবে নিশ্চয়। এই সব ভাবতে ভাবতে রান্না ঘরের দিকে চলে যায় দয়াময়ী। ছেলেটার সামনে আসে না, দেখলে আবার কথা বলতে হবে-- তার ভয়ে। রাতের খাবার খেয়ে সুজন চলে যায়। লীলা ঘুমুতে আসে বিছানায়। সাবধানের মার নেই,  দরজাটা ভাল করে বন্ধ হল কিনা দেখে আসেন দয়াময়ী। আবার একটা নির্ঘুম রাত, মাঝ রাতে নিশির ডাকের মতন পুকুরে চান। 

আবার সকাল হয়।
লীলা স্কুলে যায়।
দয়াময়ী সারাদিন বাড়ীতে ঘুরে বেড়ান। বিনুর মায়ের কাজের তদারকি করেন। বারান্দা থেকে ছাদ, ছাদ থেকে আবার রান্নাঘর, সব দিক দেখাশোনা করতে তো হয়। ঝাড়পোঁছ, জিনিসপত্র গোছানো বিনুর মায়ের কাজ। সে এদিকে খুব ফাঁকিবাজ আর তার উপরে বুড়ী। আগে দয়াময়ীর কথা শুনত, আজকাল কানে কালা হয়েছে কিনা কে জানে; কোন একটা কাজ বললে করেনা। লীলাও হয়েছে তেমনি। পুরনো বাড়ি,  এদিক ওদিকে রঙ চটেছে, সিঁড়ির কোণে ঝুল জমেছে অন্ধকার করে, রেলিং এ মরচে পড়েছে, লীলা সারাদিন ব্যস্ত, সময় নেই এদিকে তাকানোর। দেখে দেখে দীর্ঘশ্বাস পড়ে দয়াময়ীর।

 -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

কদিন ধরে লীলা জিনিসপ্ত্র গোচ্ছাছে। বাড়ি নাকি বিক্রি হয়ে গেছে। তা ভাল, এই পুরোনো বাড়ী, দেখাশোনা করা মুসকিল। তবে কি একবারও দয়াময়ীকে জিজ্ঞেস করতে পারত লীলা, বড় অবাধ্য হয়েছে যবে থেকে ওই ছেলের চক্করে পড়েছে।  
যাবার দিন কতগুলো লোক এসে সব জিনিসপ্ত্র টানা টানি করে ট্রাকে তুলল। বিনুর মা চোখের জল মুছছে। দয়াময়ী দাঁড়িয়ে  দাঁড়িয়ে  দেখলেন। লীলা গাড়ীতে উঠে বসল। পাশে বসলেন দয়াময়ী। গাড়ী ছেড়ে দিল, শ্বশুরের ভিটে ছেড়ে চল্লিশ বছর পড়ে দয়াময়ী চললেন মেয়ের কেনা নতুন ফ্ল্যাটে।

 -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

নতুন ফ্ল্যাটই ভাল। স্কুলের কাছে, আর ধারে কাছে পুকুর টুকুর নেই। ঐ বাড়ীতে আর ভালো লাগত না লীলার। বাবা চলে যাবার পর থেকেই  মায়ের অসুখ বেড়ে গেছিল। লীলা নাকি কাকে বিয়ে করে চলে যাচ্ছে এই ভাবনায় ঘুমোতে পারত না। তার সাথে খিড়কি পুকুরে রোজ রাতে চান করতে যাওয়া। সেটাই কাল হল। আজ দয়াময়ীর জন্মদিন। পায়েসর বাটি তাঁর ছবির সামনে রাখতে রাখতে ভাবে লীলা।  ফুলের মালা, ধুপ আর পায়েসের সুগন্ধ মিলেমিশে যায়।  দয়াময়ীর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি, লীলা পায়েস বানায় জব্বর; হাতের তার একদম ঠাকুমার মতন। 

লীলা স্কুলে বেরোয়। বাইরে থেকে তালা দিয়ে যায়। দয়াময়ী মনে মনে বলেন দুগগা দুগগা।






Saturday, July 9, 2016

দুচ্ছাই

কিছুই ভাল লাগেনা আজকাল। সামনে অনন্ত সময় খোলা মাঠের মতন ছড়িয়ে আছে। ফেলে নষ্ট হচ্ছে। সেই দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস পড়ছে বড়বড়। মাথার মধ্যে কিল বিল করছে হাজার চিন্তা। যাদের অনেকের শেপ ফর্ম ও অজানা, তাও ভীড় করে আসছে, জলের মধ্যে থেকে ঘাই মেরে উঠছে। কমসে কম চারমাস হলে গেল আরো মিনিমাম তিন মাস। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙি ভাঙি করছে এবার।

আমার পোঁতা জবা গাছ দুটোই মরে গেছে। শুধু নয়নতারার গাছটা এখন রোজ ফুল দিচ্ছে; তার কমিট্মেন্ট প্রশংসনীয়।

ন্তুন বাড়ীতে এসে মা সারাক্ষণ কমপ্লেন করে যে আগের বাড়ীর সব ভাল ছিল, এখানে সব খারাপ। সব খারাপ আমার মনে হয় না, তবে আগের বাড়ী থেকে বৃষ্টি যে অনেক ভাল দেখা যেত সেটা নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই। গত ২ সপ্তাহ ধরে আমার নিজের মনকে  নানা রকম মিথ্যা কথা শোনানোর পর আজকে সেটা মেনেই নিলাম।
পশ্চিম আকাশ কালো করে থরে থরে মেঘ জমা হত। তারপর আসত যখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। মাঠের মধ্যে গাছগুলো হাওয়ায় দুলতো। জানলা থেকে দেখতাম। বৃষ্টিতে গাছগুলো সব চান করে নিত,পাতার রঙ ঝকঝকে সবুজ। ঘাস আর ন্তুন নুতন আগাছা, তারাও ফিটফাট হয়ে যেত। যখন ঝড় আসত বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতাম। হু হু করে হাওয়াতে বাস স্ট্যান্ডের দিকে গাছগুলো এদিক-ওদিক দুলত। ওরকম আরাম আর শান্তি যেন আর কোথাও নেই। খুব বৃষ্টির পরে বহুকাল রং না হওয়া কোয়াটার্সের বাড়ী গুলোর গায়ে কালো কালো ছোপ ফুটে উঠত। এই নতুন জায়গায় সব সুন্দর সুন্দর ন্তুন রং হওয়া বাড়ী, বৃষ্টিতে তাদের কিছু হয় না; তারা কোনো গল্প বলে না।

এই বিরক্তিকর সময়ে এক মাত্র ভাল জিনিস হল ঢোলু বাবু। সারাদিন ঘুমিয়ে এখন রাতের বেলা খেলা করে বেড়াচ্ছে। বোলের ধার ঘেসে গোল গোল করে ঘুরে আর মুখ থেকে বু বু করে বাতাস বের করে কি আনন্দ তা ঢোলুই জানে। আর ভালবাসে শব্দ। আমাদের বকবকানি বা ইউটিউবের গান, যেকোনো রকম আওয়াজেই সে খুশী।

আমি সারাদিন ঘ্যান ঘ্যান করছি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অদ্ভুতুড়ে সিরিজও সেই ঘ্যান ঘ্যান
কমাতে পারছে না। শপিং থেরাপী ( দুটো বই কিনলাম) ও না। আগে এরকম অবস্থা হলে হেয়ার স্পা করাতাম; এখন সেই উপায়ও নেই । তাই ব্লগ লিখে দুঃখ কমানোর চেষ্টা করছি। 

আপনারা ঘ্যান ঘ্যান কমাতে কি করেন ??

আমাকে দু চারটে সাজেশন দিন ( ভাল ভাল খাওয়া বাদ দিয়ে); সেগুলো দেখব ট্রাই করে।




Thursday, July 7, 2016

সময়

দুদিন বসে ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ পড়ে শেষ করতে পারলাম। ১১৩ পাতার ট্রাভেলগ। জার্মানী, হাঙ্গেরি, রুমানিয়া, পোল্যান্ড আর রাশিয়া ঘুরে লেখা।  লেখক যখন গেছেন এই দেশগুলোতে তখন ইউরোপ জুড়ে চলছে রাজনৈতিক পালাবদল। হয়েছে সমাজতন্ত্রের পতন, বার্লিন ওয়াল ভেঙ্গে দুই জার্মানী মিলেছে, রুমানিয়াতে সেসেস্কু উৎখাত, পোল্যান্ডে এসেছে নুতন সরকার, আর সোভিয়েত ইউনিয়ন  হয়ে গেছে ভেঙ্গে টুকরো  টুকরো। সেই নিয়েই লেখা ভ্রমণকাহিনী।  অনেকদিন পরে টানা একটা বই পড়ে শেষ হল। অভাবটা সময়ের ছিলনা; ছিল ধৈর্যের। এই বইটার শুরুর দিকে পড়ছি কিন্তু বুঝছিনা দশা হয়েছিল। ট্রাভেলগ কিছু জটিল ব্যাপার নয়; তাও হচ্ছিল। বার বার ফিরে যেতে হচ্ছিল আগের পাতায়। মনোযোগের অভাব এবং স্মৃতিশক্তির দোষ। শেষে বইয়ের ৮০ পাতায় পৌঁছে মাথার মধ্যে যেন এলো জ্বলে উঠল। এতক্ষ্ণ যা যা পড়ছিলাম তা তো বটেই , তিন বছর আগে পড়া কেন ফলেটের " দ্য সেন্চুরী ট্রিলজী " (এর বই এর কন্টেন্টের সঙ্গে মিল আছে) সেগুলোও মনে পড়তে শুরু হল। তখন বুঝলাম সমস্যা আসলে মনোযোগের নয়, সময়ের। একটা বই পড়ে তার আত্তীকরণ হবার জন্য মিনিমাম একটা টাইম দিতে হয়,  এতোক্ষ্ণ কাউন্টডাউন চলছিল, ৮০ পাতায় পৌঁছে ঘন্টা বেজেছে। ইঞ্জিন গরম হয়েছে; যা যা ইনফরমেশন জমা হয়েছিল তাদের প্রসেসিং হয়ে গেছে, বাকি নতুন ইনফোদের ওয়েটিং টাইম কম, তারা হুড়মুড় করে প্রসেস হচ্ছে।

জীবনের বাকি জিনিসগুলোও এরকমই। পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে রান্নাবাটি শেখা, ল্যাবের প্রজেক্ট, থেকে নতুন সম্পর্ক এরকম আরো পাঁচশ হাজারখানা বিষয় সব কিছুই একটা মিনিমাম সময় দাবী করে। তার আগে তারা মোটেই ওয়ার্কিং কন্ডিশনে রিচ করেনা। বিশেষত সদ্যোজাত অবস্থায় রাতারাতি কাজ করা সম্পর্ককে আমি সাঙ্ঘাতিক সন্দেহের চোখে দেখি। আমার সিনিকাল মনে এই ভাবনাই আসে যে নিশ্চয় কিছু ইনফরমেশন মিস হচ্ছে, পুরো ছবিটা স্পষ্ট নয় তাই এতো ফ্ল-লেস দেখাচ্ছে। 

এই সময় জিনিসটাই খুব মজার। এই গুচ্ছ গুচ্ছ প্যাকেট ভরতি ছিল-- আবার পরের মুহূর্তেই প্যাকেট ফাঁকা। সেই ভরতি আর ফাঁকার মাঝের ফোকরে যেটুকু জমা থাকে সেটাকে ইউস করে নেওয়াটাই আসল চ্যালেঞ্জ। যে যত বেশি করতে পারবে তার তত লাভ। তবে আমার মত লেট লতিফদের কথা আলাদা---তাদের কাছে সময়ের দাম এত বেশি যে কিপটের মতন আস্তে আস্তে খরচ করতে গিয়ে শেষে দেখা যায় প্যাকেট শূন্য, হাতে পেন্সিল।

তবে যেরকম উধাও হয়ে যাওয়াটা সময়ের ধর্ম, সেরকম ফাঁক ভরানোটাও তারই কাজ। যেসব পরিবর্তন অযোগ্য অবস্থা দেখে এখন মুখ বেঁকিয়ে, ঠোট ফুলিয়ে বলছি ভালো না, বিচ্ছিরি, সময়ের কাজ হচ্ছে তাকে চলনসই করে দেওয়া। সইয়ে নেওয়া। ভুলিয়ে দেওয়া।আর সেগুলো সর্বদা সময় সাপেক্ষ।

তাই দুনিয়া লেটুরা এক হন। আস্তে আস্তে কাজ করা নিয়ে লজ্জা পাবেন। রেসটা তো কচ্ছপবাবুই জিতেছিলেন। আর সময় খুব দামী; তাই দৌড়াতে গিয়ে ফেলে ছড়িয়ে নষ্ট করবেন না। আরামে থাকবেন, মনে রাখবেন সময়ের শেয়ার মার্কেটে ইনফ্ল্যেশন নেই।








Saturday, July 2, 2016

দুদিন

দিন ১)

সকাল পাঁচটায় কোনো অ্যালার্ম ছাড়া ঘুম ভেঙ্গে গেলে কি কি হয়।

জল খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়াটাই বেস্ট পসিবল অপশন।

কিন্তু বারান্দায় গিয়ে দেখলাম সুয্যিবাবু আকাশে উঠে বসে আছেন। সাত সকালে তার মেজাজ প্রসন্ন। ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে , যেন মরনিং ওয়াক এ বেরিয়েছে বাতাস মশাই। গাছেদেরও মুড খুব ভাল, পাতা নেড়ে নেড়ে বলছে একে অন্যকে সেটা। গাছেরা তো আর আমার মত নয়। রোজই তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায় সুয্যিবাবুর অ্যালার্মে। সুপুরি গাছে আলো পড়ে অর্ধেক পাতায় সোনালী রঙ ধরেছে, তাতে তার খুশীর সীমা নেই। সাদা মেঘগুলো আস্তে আস্তে অফিসে যাচ্ছে, সক্কাল সক্কাল নো ট্র্যাফিক জ্যাম।

এই সব দেখে খুশী মনে আবার ঘুমিয়ে পড়া গেল।

পরে দুপুর বেলা দেখলাম কয়েকটা মেঘের আমার জানলার ঠিক সামনে ডিউটি পড়েছে। সাদা জামা পরে তারা গোল হয়ে গল্প করছে। আকাশের রং শরৎকালের মত নীল। সুয্যিমশায়ের আজকে কাজ করার মন নেই। তিনি আলতো চাদর জড়িয়ে ভাতঘুম দিচ্ছেন।

বিকেলবেলা কয়েকটা বাইরের মেঘ এসে ভীড় করল। তাদের আপ্যায়ন তো করতেই হবে। তাই সুয্যিবাবু বাড়ী যাবার আগে নিজের রূপচ্ছটা বিকীর্ণ করলেন। গোধূলির মায়াবী আলোতে ভরে উঠল চারদিক। আকাশের রং নীল থেকে গোলাপী, গোলাপী থেকে বেগুনী হল। শেষে চাঁদমামা এলেন অফিসে। তার হাতে চাবি দিয়ে সূর্যিবাবু  ঘুমুতে গেলেন। গাছেরা টা টা জানালো, আর নিজেরা ঘুমিয়ে পড়ল।

দিন ২)

সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। ছাই রঙের মেঘেরা গম্ভীর ভাবে আসা যাওয়া করছে। আর মাঝে মাঝে ঝুপ ঝুপ করে জল ঝরিয়ে যাচ্ছে। সুয্যিবাবু ছুটিতে গেছেন। গাছেরা চান টান করে ঝকঝকে হয়ে অপেক্ষা করছে। আজকে সারাদিন তাদের রেনপার্টি।

দুপুরের দিকে কয়েকটা সাদা মেঘ হাওয়া খেতে বেরোল। চারপাশে আবছা আলো। সে আজকে হলুদ জামা কাচতে দিয়েছে। বাতাস ঠান্ডা ঠান্ডা। অবশেষে বর্ষা আসবে আসবে করছে।


আমিঃ
বিছানায় শুয়ে শুয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ পড়ছি দুদিন ধরে।
ইউরোপ জুড়ে সমাজবাদের পালা বদলের ইতিহাস। জার্মানী, হাঙ্গেরি, রুমানিয়া আর রাশিয়া ঘুরে লেখা।
















Thursday, June 30, 2016

জন্মদিনের পোষ্ট- একত্রিশে পা

হৈ হৈ করে চলে এল ২৯ শে জুন। লাফাতে লাফাতে পা দিলাম একত্রিশে। নানা ঝড়ঝাপটা সামলে তিরিশখানা বছর মানে প্রায় অর্ধেক জীবন উতরে গেল , ভেবেই আহ্লাদে লুটোপুটি।
আর হবেই না বা কেন . সেই ছোটবেলা থেকে হাজার রকম মন খারাপ, জ্বর, পেটব্যাথা, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, পি এইচ ডি এন্ট্রান্স এমন কি বাধ্যতামুলক পেপার ছাপানো (নইলে থিসিস জমা পড়বে না)  এবং এগুলোর থেকেও কঠিন; নাহওয়া প্রেমে লেঙ্গি আর  হব হব প্রেমে ব্রেক আপ (আসলে পুরোটাই ঢপবাজি, তবে সে এখন সুখী গৃহকোণে পাড়া মাতিয়ে ঝগড়া করছে; ভাবলেই মন ভাল হয়ে যায়)--- সব সাঙ্ঘাতিক সাঙ্ঘাতিক ফাঁদ কাটিয়ে একত্রিশে পৌঁছে গেলাম। সেলেব্রেশন তো মাংতা ই হ্যায়।

কি কি হল??

১) বন্ধুরা এল। কেউ সারপ্রাইজ দিতে অন্য শহর রাতারাতি উড়ে, বাকিরা আগে থেকে জানিয়ে বা না জানিয়ে। সারাদিন আড্ডা হল। এক গাদা গিফট পেলাম--ছবি দিচ্ছি।

বই -কার্ড আর ফাইটার ফিশ ( নাম হয়েছে ঢোলু) বাকি গিফট পেটে গেছে

২) দু খানা কেক কাটলাম। সবাই হ্যাপি বার্থডে গাইলো--হেসে হেসে গড়ালাম।


৩) সারাদিন হি হি করে রাতে জ্বর এসে গেল।। তবে একটা ওষুধেই পালিয়েছে।

৪) একগাদা ফোন আর মেসেজে আড্ডা হল যারা এখানে নেই আর চাইলেই চলে আসতে পারছেনা তাদের সঙ্গে।


কি কি হলনা??

নাকুচিয়াতালের পাশে কে এন ভি এন এর হোটেলে বসে নীলজল দেখতে দেখতে চা খাওয়া হল না। প্ল্যানে ছিল কিন্ত ু ভগা হাসলেন। কুছ পরোয়া নেই--- অন্য সময় হবে।

বাকি মজা পরের বছরের জন্য তুলে রাখলাম , পরের বছর আজ থেকেই শুরু।

জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় (অর্ধেকের কম হলে আরো ভালো) কাটিয়ে এটাই বুঝলাম যে, 

১) একটু চোখ খোলা রেখে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে অনেক ঝামেলা কমে। 

২) ভাল সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই--সেই তা বাবা মা হোক, আত্মীয় হোক বা বন্ধ ু। রিলেশনশিপস আর দ্য বেস্ট ইনভেস্টমেন্ট।

৩) আর দুশ্চিন্তা হল সময়ের অপব্যবহার (গুণীরা আগেই বলেছেন)।

যাই হোক ভারি কথা বলে সময় নষ্ট করবো না আর। মেনু বলি বরং। বিরিয়ানি আর চিকেন চাপ আর পায়েস। খাবার দেখেই প্লেটে ডাইভ মেরেছিলাম তাই ছবি নেই ।


আমরা সবাই

 বাই দ্য ওয়ে, গতকাল নতুন বাড়ীতে এসে ঢোলু একটু মনমরা ছিল। আজকে দিব্যি একা একা খেলা করছে। 







Tuesday, June 28, 2016

১৪ ই জুন (মঙ্গলবার) দিনটা

তিন মাস বাড়ীতে বসে থাকলে আর তিন মাসে গুনে গুনে ১১ দিন বাড়ী থেকে বেরনো হলে অন্য লোকদের কি হয় আমি জানি না। তবে আমার যেটা হল তাকে পাতি বাংলায় বলে ডিপ্রেশন।

ডাক্তারবাবু আগেই একটা ভারি নামওলা বলেছিলেন  --- anticipatory anxiety. তবে সবাই হাসল---এতো পরীক্ষার আগে সবার হয়েছে। আমি হাসলাম না তবে জেদ ধরে রইলাম যে ফালতু ঘুমের ওষুধ খাব না। বার দুয়েক ছড়িয়ে ফেলার পর সেটা কেটে ও গেল। আর তার ভাই এসে হানা দিলেন।
অকারণ রাগ আর অকারণ কান্না-- দুটোই বিয়ন্ড কন্ট্রোল। তখন নতুন ওষুধ ঠিক হল--- বেড়োনোর মহৌষধী।

তাই সেজে গুজে একটা মেঘলা মঙ্গলবার বেড়িয়ে পড়া গেল।
প্রথমে খাদ্যানুসন্ধান, তার জন্য অবশ্য জোমাটোই কাফি। বাড়ির কাছে অতি পুরোনো হাটারির অপেক্ষাকৃত নুতন রেস্টোর‍্যান্টে গিয়ে লাঞ্চ করা গেল। হাটারিতে বহুকাল আগে খেয়েছিলাম, কিছুই মনে ছিলনা খাবারের সম্বন্ধে-- দেখা গেল দুজনের জন্য অপর্যাপ্ত অর্ডার হয়েছে---কিছুটা বাড়ী নিয়ে যেতে হল।
চিকেন ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস (Chicken in sweet and sour sauce)

মিক্সড মেইফুন (Mixed meifoon)

লাঞ্চের পরে কি হবে সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। দৌড়ে বাড়ী নাকি ভ্রমণ ! দেখা গেল ওয়েদার এবং বাকি সব কিছু ভ্রমণের পক্ষে রায় দিচ্ছে।
ড্যানিশ লেখক আইজাক ডিনেসিনের মত মেনে  " The cure for anything is salt water: sweat, tears or the sea" যদি সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে পা দোলানো যেত তাহলে আমার অশান্ত মনের শান্তি  হত পুরোপুরি। কিন্তু তার যখন উপায় নেই, তখন গঙ্গার ঘাটই ভরসা। তাই যাওয়া হল আদি অকৃত্রিম বাগবাজারের মায়ের ঘাটে।

কলকাতার এই জায়গাটা বেশ অন্যরকম , অন্তত আমার চোখে। ট্রেনলাইন পার হয়ে ঘাট। তাতে বসে আছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ জন। ছবি আঁকা ছোকরা, দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গল্প করা জুটী, গঙ্গা জল নিতে বা নিত্যদিন ঘাটে গল্প করতে আসা বয়স্ক লোকজন, স্নানার্থী এবং জলে ঝাঁপ দিয়ে পয়সা খোঁজা ছেলে এবং সেলফি শিকারীর জমায়েত হয়েছে। তার মধ্যে গিয়ে আমরা ঘাটের উপরে বসে পড়লাম। আর অপার শান্তি। বিকেলে পড়ন্ত আলোয় চিক চিক করছে জল- তাতে সোনালী রঙের ছোঁয়া। জলে ছোট ছোট নৌকো ভাসছে, আপাতত তাদের কোথায় যাবার তাড়া নেই। একটা  মাল ভর্তি স্টিমার ভেসে গেল। নদীর উলটো দিকে বড় বড় গম্বুজের মতন দেখা যাচ্ছে--সেটা কি আমি জানি না।
                               



কিছুক্ষন জলের দিকে তাকিয়ে মনের ক্লান্তি ধুয়ে দেবার চেষ্টা করা গেল। আমাদের পাশে বসে থাকা ভদ্রলোক জোয়ার ভাঁটার খবর দিতে লাগলেন। এরকম সময়ে  মুর্তিমান রসভঙ্গের মতন দুই ভদ্রলোক হাজির হলেন হাতে প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে। তাদের দেখেই ঘাটে বসে থাকা এক্সপিরিয়েন্সড লোকের এখানে প্যাকেট ফেলা মানা আছে বলে চেঁচাতে শুরু করল। তারাও আমরা লোকাল লোক সব জানি, বলে দাবী করলেন। শেষে একজন রণে ভঙ্গ দিয়ে প্যাকেট যথাস্থানে আর আরেক জন "মানছি না মানব না' করে প্যাকেট জলে ফেললেন। বাকিরা দু চারটে কড়া কথা বলে নিজেদের কাজে মনোনিবেশ করল। আমরা ও ঘাট ছেড়ে কফির খোঁজে বেরোলাম।

বাগবাজারে CCD পাওয়া গেল না। অটো স্ট্যান্ড থেকে বলল শ্যামবাজার। শ্যামবাজারে গুগল ম্যাপ বলল ফড়িয়াপুকুর। আমার পক্ষে পাঁচ মাথার মোড় থেকে অদ্দুর হেঁটে যাওয়া দুরস্ত, তাই হাতে টানা রিক্সা নেওয়া হল। একটা মানুষের ঘাড়ে ( পরুন হাতে) এরকম দুজন পুর্নবয়স্ক লোকের চেপে বসার গ্লানিটা অগ্রায্য করলাম বাধ্য হয়ে। যদিও সাইকেল রিক্সাতে সব সময় চড়ছি, তাতে কোন লজ্জা বোধ করিনা।  হাতে টানা রিক্সাতে চড়া সহজ ব্যাপার নয়, চাপিয়ে দিয়ে  যখন রিক্সাজ্যেঠু যানটিকে হাতে তুলে নেন , তখন মনে হয়  পেছন দিয়ে উলটে যাব। নামার সময়ও সামনে দিয়ে গড়গড়িয়ে পপাত চ হবার সম্ভাবনা থাকে।  আমরা সেই রিক্সাতে প্রান হাতে নিয়ে বসে রইলাম আর বাস, ট্রাম, সাইকেল সব কাটিয়ে রিক্সাজ্যেঠু ছুটতে লাগলেন। 

হাতে টানা রিক্সাতে এর আগে জীবনে একবারই চড়েছি, এম জি রোড থেকে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত ।  যাত্রা সেভিং রিক্সা না থাকলে সেদিন সবাই হাতিয়া এক্সপ্রেস চড়ে নেতারহাট পৌঁছে যেত আর আমি পরে থাকতাম কলকাতায়। তাই এর প্রতি আমার কৃতজ্ঞ্তা প্রবল। আমার সহযাত্রীর সেদিন এতে হাতেখড়ি হল, সেও সমান খুশী ও উত্তেজিত। ফড়িয়াপুকুর গিয়ে বোঝা গেল ম্যাপ বুঝতে সামান্য ভুল হয়েছে-- CCD  টি রাজা দিনেন্দ্র স্ট্রীটে, সেটা রাস্তার উল্টোদিক।
আরো কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি এবং লোকজন কে জিজ্ঞেস করার পরে (CCD কেউ চেনে না, তবে একজন বললেন এই রাস্তাই ঠিক যদিও গন্তব্য সম্বন্ধে তিনি অজ্ঞ) অটোতে ওঠা ঠিক হল। এবং সমাপতনের মত  কফিশপ পৌঁছে গেলাম। এর পরে আর কিছু নেই। খেয়ে দেয়ে ট্যাক্সি করে বাড়ী ফেরা হল। 















Saturday, June 25, 2016

অ্যান ইউসুয়াল ল্যাব আউটিং (An usual lab outing)

এরকম বহুবার হয়েছে লাষ্ট ৬ বছরে, কিন্ত ু তখন ব্লগ ছিলনা তাই লেখার প্রয়োজনও ছিলনা। আর তখন এই ল্যাবের দিনগুলো দ্রুত বেগে শেষ হয়ে যাচ্ছিলনা। তাই এটা একটা এসেনশিয়াল ল্যাব সংক্রান্ত পোষ্ট, যেটা পড়ে ভবিষ্যতে আমার লজিক-নষ্ট হবে।

দেশ এবং হয়ত কাল নির্বিশেষে গ্রাজুয়েট স্ট ুডেন্টদের মধ্যে  যা যা মিল পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হল পারপিচুয়াল হাঙ্গার---- না না জ্ঞানের ক্ষুধার কথা আমি বলছি না। তা নিশ্চয় আছে বেশির ভাগের মধ্যে, সবাই তো আমার মতন নয়। আমি বলছি নেহাতই পাতি শারীরিক ক্ষুধার কথা, যাকে মেটানোর জন্য এত পড়াশুনা, পরীক্ষা দেওয়া, চাকরি করা এবং তিন বেলা পাত পেড়ে খেতে বসা। তবে এই খাবার ইচ্ছেটা অনেক সময় মানসিকও বটে। অনেক সময় বলাভুল কারণ প্রথমত শরীর আর মন দুটো আলাদা একেবারেই নয় আর ভাল খাবার খেলে যে পরিমাণ মানসিক তৃপ্তি আসে, যাকে আজকাল বলা হচ্ছে গ্যাস্ট্রোইনস্টেটিনাল প্লেজার সেটা অতীব সাঙ্ঘাতিক একটা এক্সপিরিএন্স। আর মন ভাল না থাকলে কাজ ভাল কি করে হবে!

তাই  বাইরে খাওয়া চলতেই থাকে, কারণ ক্যান্টীন তো এখন প্রায় বাড়ীর মতন। আর মানুষের তো তিনটে হাত-- ডান, বাম আর অজুহাত। তাই বাইরে খেতে যাবার কারণের অভাবও হয়না কখনো।
এক্সপেরিমেন্ট কাজ করার আনন্দ বা না করার দুঃখ, পেপার পাঠানো, অ্যাক্সেপ্টেন্সের কিংবা রিজেক্টেড হবার সেলিব্রেশন ( বস বলেছে ওয়ান শুড সেলিব্রেট দেয়ার ফেলিওর টূ), অনেক দিন যাইনি, বা আজকে ল্যাব যেতে/ কাজ করতে ইচ্ছে করছে না--খেতে গেলেই হয়----- রিজনের লিষ্টটা এন্ডলেস। আর যেতে না পারলে অর্ডার করলেই হল।

সেই যে ২০১০ এ কাফিলা যাওয়া থেকে শুরু হয়েছিল, সেই ্ট্র্যাডিশন বজায় রেখে, বস সমেত অথবা ছাড়া (কারণ বিভিন্ন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ মিটিং এর ব্যস্ততা); আমরা জয়যাত্রায় যাচ্ছি এরকম হাবভাব নিয়ে ফুড আউটিং চালাতে থাকি। তবে রিসেন্ট ২৯ মে যেটা হল সেটা রু এর অ্যচিভমেণ্টের সেলিব্রেশন--- আর ট্রিটও জয়-অধিকারীনির পক্ষ থেকে। তাই বাকিরা নাচতে নাচতে গেলাম, বস গেলেন না;  হরলিক্সের বাচ্চার মতন  "আমি খুব বিজি বলে"।

যাওয়া হল ল্যাবের কাছেই চাওম্যানে--সেফ, ট্রায়েড অ্যান্ড টেস্টেড। দুপুর ১ টায় পুরো রিক্সাহীন রাস্তায় কিছুক্ষ্ণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে ভগবান প্রেরিত ভাবে একটা ব্যাটারি চালিত রিক্সা- অটোর সংকর বস্ত ুউদয় হল। নাকি পাঁচজন চড়তে পারে--- সাঙ্ঘাতিক ওভার এস্টিমেশন সেটা। তবে যাদের মন্শচক্ষে ৫/৭ মিনিট রিক্সায় ঝোলার ইন্সট্যান্ট রিওযার্ড হিসাবে চাইনিস নাচানাচি করছে , -- তাদের কাছে এ আর এমন কি কঠিন কাজ।

রৌদ্র করোজ্জল দিন  



হাইব্রিড ব্যাটারি রিক্সাতে আমরা


দেখে যতটা সিম্পল মনে হচ্ছে ব্যাপারটা তার চেয়ে জটিল। রিক্সায় দুরকম সিট--- নর্মাল ফর অ্যাডাল্ট আর টাইনি ফর কিডস (মেরে কেটে ১০/১২ বছরের বেশি নয়)। নর্মাল সিটেও আমাদের মতন হেভি ওয়েটদের দুজন ধরে। তাতে ৩ জন আর কিডস সিটে ২ জন (পা বাইরে ঝুলিয়ে বসে রয়েছে)। আর চালাও পানসী থুড়ি রিক্সা চাওম্যান।


বৃথা বাক্যব্যয় করে লাভ নেই, কি কি খেলাম তার ছবি দিচ্ছি।

চিকেন লেমন করিয়েন্ডার স্যুপ (chicken lemon coriander soup)

সি ফুড স্যুপ (sea food soup)

স্টাইর ফ্রায়েড চিকেন (stir fired chicken)
ক্রিপসি কনজী চিকেন (crispy conjee chicken)

চিকেন মোমো (chicken momo)
সিঙ্গাপুর মেফুন আর ফিশ ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস (Singapore meifoon and chicken in sweet and sour sauce)
বেরোনার সময় বৃষ্টি এসে গেল--তাই জি এর আর শর্মা গিয়ে গোলাপ জামুন খাওয়া হল না। অটো করে ল্যাব ফেরা হল।


এত খাবার খেয়ে চা/ কফি না হলে কি করে কাজে মন বসবে।

VECC  যাওয়া হচ্ছে (সাদা জামাতে বস)


মেঘলা বিকেলে  SINP এর গেট

 র‍্যান্ডম
কেউ গেল সাতসমুদ্রের পারে পোস্টার দিতে আর বাকিরা বাড়ীতে বসে পা দোলাল আর ক্যাডবেরি খেল যত খুশী


দিনটা ভালো কাটল। ইউসুয়াল ও ভালো , লম্বা হোমস্টের পরে তো সুপার ভাল।
                                           

Thursday, June 23, 2016

নাইট আউল এবং সাঁতারকান্ড

রাত জেগে থাকার আসল কারণ হচ্ছে ডেডলাইন। কিছুটা নিজের (সময়ের কাজ সময় থাকতে কি আর ভদ্রলোকে করে) আর বাকিটা ওষুধ দিতে না-জানা এবং জানা ডাক্তারবাবুদের ( স্ত্রী- পুরুষ লিঙ্গ ব্যবহার বাঞ্চনীয় নয়)।

কিন্ত রাত জেগে কাজ কতটা হচ্ছে বলা মুশকিল তবে মাথা কদিন ফাঁকা যাবার পরে ব্লগের আইডিয়া এল--সেটাই বা কম কি।  আর  এক সং্কট মুহূর্তে লাফিয়ে ঝাপিয়ে ১০ টা পোস্ট লিখে, রাজ্যশুদ্দু লোক কে মেসেজে, হোয়াটস অ্যাপে, ফেসবুকে দেখো আমি কেমন লিখতে জানি বলে বড়াই করেছি। এখন ১ মাস না যেতেই আইডিয়া নেই , ব্লগ বন্ধ বললে নিজের কাছেই নিজেই হাসির পাত্র হতে হয়।

তাই আইডিয়া আসাটাই সেলেব্রেশনের কারণ।

যাই হোক, ব্যাপার হল রাতজাগা নিয়ে। কিছু লোক রাতে জাগে আর দিনে ঘুমোয়। স্কুল- কলেজে আমি এই দলে পড়তাম না - যেই পড়াশুনা শেষ হল, অম্নি আমার রাত জাগা শুরু হল। এতে আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছিলনা, হচ্ছিল বাড়ির লোকের এবং হিতৈষী প্রতিবেশীর। মায়ের নাকি ঘুম হচ্ছে না, যদিও দুজনের ঘর আলাদা। মাঝে মধ্যে উলটো দিকের বাড়ির পন্দার ও মায়ের সমস্যা হচ্ছিল (পন্দার আসল নাম সামান্য আলাদা, তবে আমার সুরক্ষার খাতিরে এই নামটি ব্যবহার করা হচ্ছে। নামকরণকারীঃ সদ্য কথা বলতে শেখা আমার কাকাতুতো ভাই) , যদিও পন্দার ফ্ল্যাট আমার ঘর থেকে প্রায় ১৫ ফিট দূরে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে পন্দার মায়ের অসুবিধাটা আসলে কৌতুহলজাত---"রাত জেগে ল্যাপটপে কি করা হয় " গোত্রের। আমার মায়েরটা দুশ্চিন্তা করার মাতৃসুলভ অভ্যাস এবং দায়িত্ব পালন ছিল। তবে সবার অসুবিধা অগ্রাহ্য করে আমি রাতে জেগে থাকা এবং তার ফলে দেরীতে ল্যাব যাওয়া বজায় রাখছিলাম।
রাত জাগার সপক্ষে যুক্তি ছিল যাদের মুনসাইন হয় তারা নাকি "নাইট আউল"--আর নিজের জন্মের মাস তারিখ তো আমার হাতে ছিলনা। তাই দোষটা আর যারই হোক না কেন--আমার অন্তত নয়।

এভাবে ভালোই চলছিল--কিন্তু এসে গেল পি এইচ ডি র সাঙ্ঘাতিক থার্ড ইয়ার----আর দ্যাখা গেল প্রজেক্ট কিছুই দাঁড়ায়নি। তখন ল্যাবের অলিখিত প্রোটোকল মেনে সাঁতার শিখতে ভর্তি হয়ে গেলাম। সকাল ৮ টায়  ৩০ মিনিটের ক্লাস। স্কুলে থাকতে দুবার ভর্তি হয়ে সুইমার হতে পারিনি (নিজের সুইমার বন্ধ ু কে জলে প্রায় ডুবিয়ে দিচ্ছিলাম) ---এবার সব সুদেআসলে পুষিয়ে নেবো--এরকম একটা মারকাটারি মনোভাব নিয়ে সকাল সকাল উঠে পুল যাওয়া শুরু হল। সাঁতার ভালই হচ্ছিল, ১৫ মিনিট দেরিতে পৌঁছাছিলাম তবে বড় পুলে প্রোমোশন হয়েছিল। ফাঁকিবাজ বলে পরিচিতিও হয়েছিল , তার মানে নোটিশড হচ্ছিলাম। আড্ডাও ভালো চলছিল---  অ দিদি ছিল আর একটা চারবছর বয়সি বন্ধু হয়েছিল। ল্যাব থেকে অ এবং ন দিদিও  সাঁতার যেত--তারফলে কাজের মধ্যে ফাঁকা সময়গুলো রোজ কে কি ভুল করল, কতটা পারল, গভীরে গেল নাকি হাঁটুজলে হাবুডুবু খেল, পা নড়ল নাকি হাত, ডুবে গেল কিনা এই আড্ডা চলত সারাক্ষন। আর হত ইউটিউব দেখে প্রাইভেট টিউশন নেওয়া। এই সাঁতারের চক্করে রাতজাগা মাথায় উঠে গেল। বাড়ী ফিরে বেলা ১০.৩০ এর মধ্যে ল্যাব যাওয়া শুরু হল এবং কপিবুকের মতন এক্সপেরিমেন্টরা রেজাল্ট দিতে শুরু করল। শেষে বস ডেকে ঘোষনা করলেন রাত জাগে শুধু চোর, আর ভুতেরা (কপিরাইট- বসের বাড়ীর লোকের)---আমার যে সাঁতারকালীন উন্নতি ঘটেছে তাতে উনি বেজায় খুশী।

ঠিক তার ১৫ দিনের মাথায় ইনফেকশন হতে হাত ফুলে সাঁতার যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল সেবারের মতন। এই অসুখ খুব ভুগিয়েছিল, মাস খানেক ল্যাব কামাই হয়েছিল--তবে তা অন্যগল্প। 

আমি আবার আগের রুটিনে ফেরত চলে গেলাম--- ভুত আর চোরের সাথে রাত জাগতে থাকলাম।

বি দ্রঃ পোষ্টটা রাতে লেখা শুরু হয়েছিল, কিন্ত ু ডেডলাইন চক্করে  লেট হয়ে গেল।

সবাই ভালো থাকবেন, দিন কিংবা রাত যখন জেগে থাকতে ভালো লাগে সেটাই করবেন---পন্দার মায়ের অসুবিধার তোয়াক্কা করবেন না (নিজের মায়েরটা করতে পারেন )।







Sunday, June 19, 2016

সান ডে ব্ল ু স এবং চকোলাট

কোনো কোনো দিন এরকম হয়। জীবনে সব না কাটাতে পারা ছুটির দুঃখ ঝপাঝপ মনে পরে যায়। কে কবে পেন্সিল নিয়েছিল, ফেরত দেয়নি; ক্লাস ফাইভে কে জিভ ভেঙ্গিয়ে ছিল; কোন বিয়েবাড়ীতে   সম্পর্কে সুতো এতই জট পাকানো যে আগামাথা হারিয়ে গেছে, সেরকম কেউ বলেছিল এম্মা মেয়ে দেখতে তেমন সুন্দর হয়নি,তাই না; এইসব অকিঞ্চিতকর কথা যেগুলো মনের মধ্যে ডুবে ছিল , সারাশব্দহীন ভাবে, তারা হঠাৎ জ্যান্ত হয়ে উপরে ভেসে উঠে ইলিবিলি কাটতে শুরু করে দেয়।

তখন বাকি দুঃখগুলোও জেগে ওঠে। যে ঘটনাগুলো এখনো ঘটেনি সেরকম দুঃখ-ভয়-রাগরাও লাফাতে শুরু করে দেয়। "পজিটিভ জিনিসগুলো দেখো" এই জাতীয় কোনো প্রয়োজনীয় সদুপদেশ কাজে আসেনা।

তখন হাও মাও করে চেঁচানো ছাড়া মুক্তি নেই।




চকোলাটঃ

http://www.imdb.com/title/tt0241303/




Storyteller: Once upon a time, there was a quiet little village in the French countryside, whose people believed in Tranquilité - Tranquility.

Storyteller: If you lived in this village, you understood what was expected of you. You knew your place in the scheme of things. And if you happened to forget, someone would help remind you.

Storyteller: In this village, if you saw something you weren't supposed to see, you learned to look the other way. If perchance your hopes had been disappointed, you learned never to ask for more. So, through good times and bad, famine and feast, the villagers held fast to their traditions. Until, one winter day, a sly wind blew in from the North...
সেই উত্তরে বাতাসের পথ ধরে গ্রামে এলেন জুলিয়া বিনচ (অনস্ক্রীন নাম ভিয়েন), সাথে ৬ বছরের মেয়ে আনুক। খুলে বসলেন একটা চকোলেটের দোকান, আর আস্তে আস্তে বদলে গেল গ্রামের লোকদের জীবন।

ভাল গল্প---- রুপকথার  মত "যার  শেষ ভাল , তার সব ভাল " দিয়ে শেষ।
না দেখলে একটা "ফিল গুড" মুভী মিস।






Thursday, June 16, 2016

চা- কফি- ইত্যাদি

সারাক্ষণ মনটা চা চা করত। ল্যাব থেকে তিনবেলা ক্যান্টিনে চা খেতে যাওয়ার রেওয়াজ ছিল। সকাল ১১ টা, দুপুর ৩ টে আর বিকেল ৬টা । এই সবগুলোতে  সব সময় পার্টিসিপেট করা যেত না, কারণ কাজের সময় সবার আলাদা আলাদা। ক্যান্টিনে চা এর টাইম ও বাঁধা, তাদের আরো রান্না-বান্না আছে। বাকি সময় চা খেতে হলে কিয়স্ক ভরসা। লেবু চা, লিকার বা নেস কফি। তার সঙ্গে কিয়স্কের ছেলেটার (যার নাম সোম)  বকবকানি ফ্রি।
" কাজ করে কি হবে, সেই তো সাত বছর লাগবে।" ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর যখন ল্যাবে এত কাজ পড়েছে যে বেরনোর উপায় নেই, তখন ল্যাবেই আসত চা কিয়স্ক থেকে। তবে সেটা সহজ ব্যাপার নয়-- ফোনে অর্ডার দাও , তারপর অপেক্ষা কর--- এবং শেষে "নেহাত  ক দিদির ল্যাব তাই দিয়ে গেলাম, নইলে আমি খুব বিজি।"  


ক দিদি ক্যান্টিনে হামলা করেছে


ক্যান্টিনে চা এবং টা


                                           কিয়স্কে আমরা---তখনো ছোটো ছিলাম (২০১০)


শনিবার ২টোর পরে ক্যান্টিন -কিয়স্ক দুটোই বন্ধ। তখন হয় পাশের ভি ই সি সি তে যাও অথবা খালপাড়। খালপাড়ে গেলে অবশ্য জিলিপি আর সিঙ্গারা খাওয়া যেত। অথবা রাস্তার মোমো বা ঝালমুড়ি। আর যখন বেরনোর একদম ইচ্ছে নেই কিন্তু চা না খেলে বাঁচব না, তখন ইলেকট্রিক কেটলি আর টী ব্যাগ ভরসা।



                                                            ল্যাবের ইলেকট্রিক কেটলি

কিন্তু জীবনে কোনো সুখই চিরস্থায়ী নয়,এই কথাকে সত্যি প্রমান করে কেটলি ভেঙ্গে গেল একদিন আর কিয়স্কও উঠে গেল। তখন চা এর জন্য টাইম বেঁধে গেল। সেই টাইমের বাবু হয়ে চলছিল। বসের মুখে হাসিও ধরছিল না, কিয়স্ক উঠে গিয়ে নাকি আমাদের আড্ডা কমেছে, কাজের সময় বেড়েছে।

এরকম মাস খানেক চলার পরে এল সুখবর। ভি ই সি সি তে CCD র স্টল খুলছে। গদি আঁটা চেয়ারওলা, এ সি লাগানো,  ৬০ টাকা কফি তে ২০ টাকা ট্যাক্স বসানো CCD নয়।  একটা কাঠের বাক্সের মধ্যে টেবিল পেতে কফি বানানোর মেশিন রাখা। মেশিনের মাথায় গোল ট্রান্সপ্যারেণ্ট জার বসানো। জারের মধ্যে CCD লেখা প্যাকেট খুলে কফিবীন ঢেলে মেশিনের সুইচ টিপে কফি বানিয়ে CCD লেখা কাগজের কাপে করে দিচ্ছে-- ১০ টাকায় ছোট কাপ, ২০ টাকায় বড়।
শুধু তাই নয়, স্যুপও আর আসাম টীও বানিয়ে দিচ্ছে। সঙ্গে আরো কুকিস আর মসলা মুড়ি, কেক হেনতেন। কদিনের মধ্যে ফ্রিজের আমদানী হল, দই, লস্যি ইত্যাদি রাখা শুরু হয়ে গেল। এই স্টল সকাল থেকে বিকেলে ৬.৩০ অব্দি খোলা, মাঝে খালি ৩০ মিনিটের লাঞ্চ ব্রেক। আমরা হাতে চাঁদ পেলাম আবার। দুপুর ৩টেয় ক্যান্টীন কে ডিচ করে CCD যাওয়া নিয়ম হয়ে গেল। দল বেঁধে OC ল্যাব কফি ট্রিপ--বসও ইনক্ল ু ডেড ।


                                                                কফি-আসাম চা- স্যুপ


কিছুদিন পর ভি ই সি সি কর্তৃপক্ষের মনে হল এই CCD এর জন্য তাঁদের সুরক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে। দুটো ইন্সটিট্যুটের মাঝের কমন রাস্তার পাহারা জোরদার হয়ে গেল-- আই কার্ড না দেখিয়ে ঢোকা বন্ধ।
সেই সময় আই কার্ড  ভুলে গেলে বর্ডারে দাঁড়িয়ে কফি/চা য়ের অপেক্ষা ছাড়া গতি ছিলনা।
এখন অবস্থার উন্নতি হয়েছে--নাম লিখলেই আপাতত চলছে। জানিনা আবার কবে নিয়ম  বদলে যায়।


                                                               বর্ডার এরিয়া ( ছবি ১ )


                                                                   বর্ডার এরিয়া ( ছবি ২ )

আমাদের এই CCD প্রীতিতে সাহা ক্যান্টিনের লোকেরা শুরুতে বেজায় অভিমান করেছিল, সময়ের সাথে সাথে তার প্রশমন হয়েছে। আমরা আস্তে আস্তে একুল- ওকুল বজায় রাখতে শিখে গেলাম।

ভি ই সি সি তে CCD র  ফ্লারিশড বিজনেজ দেখে আমাদের ক্যান্টিনে একটা মেশিন বসে গেল। ভি ই সি সি র   ছেলেটি এসে নতুন লোককে কফি বানানোর ডেমনস্ট্রেশন দিয়ে গেল----- কিন্তু আমরা কফি খেয়ে মুখ বেঁকিয়ে বললাম-- হয়নি হয়নি ফেল। দুটো লোক বদল হল, তারপর একদিন বাক্স বন্দি হয়ে কফি মেশিন বাড়ী চলে গেল। এর কারণ অ্যানালিসিস করতে গিয়ে ভি ই সি সির ছেলেটির হাসিমুখ আর উদার হস্তে খুচরো দেবার ক্ষমতার জন্য ওকে অনেক বেশী নম্বর দেওয়া হয়েছিল।সাহা ক্যান্টিনের লোকটাকে কম নম্বরের কারণটা নিতান্তই শিশুসুলভ--- তাই এখানে আর বল্লাম না।

আমরা  ভি ই সি সি গিয়ে রোজকার মতন গুলতানি করতে লাগলাম। ছেলেটি আজকে ম্যাডাম ( বস যেদিন আমাদের ছেড়ে গিয়ে একা কফি খায়) এইমাত্র এসেছিলেন বলে আমাদের গসিপের জোগান দিতে থাকল।



                                                       OC ল্যাব ইন CCD ( ছবিতে  OC নেই )