তিন মাস বাড়ীতে বসে থাকলে আর তিন মাসে গুনে গুনে ১১ দিন বাড়ী থেকে বেরনো হলে অন্য লোকদের কি হয় আমি জানি না। তবে আমার যেটা হল তাকে পাতি বাংলায় বলে ডিপ্রেশন।
ডাক্তারবাবু আগেই একটা ভারি নামওলা বলেছিলেন --- anticipatory anxiety. তবে সবাই হাসল---এতো পরীক্ষার আগে সবার হয়েছে। আমি হাসলাম না তবে জেদ ধরে রইলাম যে ফালতু ঘুমের ওষুধ খাব না। বার দুয়েক ছড়িয়ে ফেলার পর সেটা কেটে ও গেল। আর তার ভাই এসে হানা দিলেন।
অকারণ রাগ আর অকারণ কান্না-- দুটোই বিয়ন্ড কন্ট্রোল। তখন নতুন ওষুধ ঠিক হল--- বেড়োনোর মহৌষধী।
তাই সেজে গুজে একটা মেঘলা মঙ্গলবার বেড়িয়ে পড়া গেল।
প্রথমে খাদ্যানুসন্ধান, তার জন্য অবশ্য জোমাটোই কাফি। বাড়ির কাছে অতি পুরোনো হাটারির অপেক্ষাকৃত নুতন রেস্টোর্যান্টে গিয়ে লাঞ্চ করা গেল। হাটারিতে বহুকাল আগে খেয়েছিলাম, কিছুই মনে ছিলনা খাবারের সম্বন্ধে-- দেখা গেল দুজনের জন্য অপর্যাপ্ত অর্ডার হয়েছে---কিছুটা বাড়ী নিয়ে যেতে হল।
চিকেন ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস (Chicken in sweet and sour sauce) |
মিক্সড মেইফুন (Mixed meifoon) |
লাঞ্চের পরে কি হবে সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। দৌড়ে বাড়ী নাকি ভ্রমণ ! দেখা গেল ওয়েদার এবং বাকি সব কিছু ভ্রমণের পক্ষে রায় দিচ্ছে।
ড্যানিশ লেখক আইজাক ডিনেসিনের মত মেনে " The cure for anything is salt water: sweat, tears or the sea" যদি সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে পা দোলানো যেত তাহলে আমার অশান্ত মনের শান্তি হত পুরোপুরি। কিন্তু তার যখন উপায় নেই, তখন গঙ্গার ঘাটই ভরসা। তাই যাওয়া হল আদি অকৃত্রিম বাগবাজারের মায়ের ঘাটে।
কলকাতার এই জায়গাটা বেশ অন্যরকম , অন্তত আমার চোখে। ট্রেনলাইন পার হয়ে ঘাট। তাতে বসে আছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ জন। ছবি আঁকা ছোকরা, দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গল্প করা জুটী, গঙ্গা জল নিতে বা নিত্যদিন ঘাটে গল্প করতে আসা বয়স্ক লোকজন, স্নানার্থী এবং জলে ঝাঁপ দিয়ে পয়সা খোঁজা ছেলে এবং সেলফি শিকারীর জমায়েত হয়েছে। তার মধ্যে গিয়ে আমরা ঘাটের উপরে বসে পড়লাম। আর অপার শান্তি। বিকেলে পড়ন্ত আলোয় চিক চিক করছে জল- তাতে সোনালী রঙের ছোঁয়া। জলে ছোট ছোট নৌকো ভাসছে, আপাতত তাদের কোথায় যাবার তাড়া নেই। একটা মাল ভর্তি স্টিমার ভেসে গেল। নদীর উলটো দিকে বড় বড় গম্বুজের মতন দেখা যাচ্ছে--সেটা কি আমি জানি না।
কলকাতার এই জায়গাটা বেশ অন্যরকম , অন্তত আমার চোখে। ট্রেনলাইন পার হয়ে ঘাট। তাতে বসে আছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ জন। ছবি আঁকা ছোকরা, দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গল্প করা জুটী, গঙ্গা জল নিতে বা নিত্যদিন ঘাটে গল্প করতে আসা বয়স্ক লোকজন, স্নানার্থী এবং জলে ঝাঁপ দিয়ে পয়সা খোঁজা ছেলে এবং সেলফি শিকারীর জমায়েত হয়েছে। তার মধ্যে গিয়ে আমরা ঘাটের উপরে বসে পড়লাম। আর অপার শান্তি। বিকেলে পড়ন্ত আলোয় চিক চিক করছে জল- তাতে সোনালী রঙের ছোঁয়া। জলে ছোট ছোট নৌকো ভাসছে, আপাতত তাদের কোথায় যাবার তাড়া নেই। একটা মাল ভর্তি স্টিমার ভেসে গেল। নদীর উলটো দিকে বড় বড় গম্বুজের মতন দেখা যাচ্ছে--সেটা কি আমি জানি না।
কিছুক্ষন জলের দিকে তাকিয়ে মনের ক্লান্তি ধুয়ে দেবার চেষ্টা করা গেল। আমাদের পাশে বসে থাকা ভদ্রলোক জোয়ার ভাঁটার খবর দিতে লাগলেন। এরকম সময়ে মুর্তিমান রসভঙ্গের মতন দুই ভদ্রলোক হাজির হলেন হাতে প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে। তাদের দেখেই ঘাটে বসে থাকা এক্সপিরিয়েন্সড লোকের এখানে প্যাকেট ফেলা মানা আছে বলে চেঁচাতে শুরু করল। তারাও আমরা লোকাল লোক সব জানি, বলে দাবী করলেন। শেষে একজন রণে ভঙ্গ দিয়ে প্যাকেট যথাস্থানে আর আরেক জন "মানছি না মানব না' করে প্যাকেট জলে ফেললেন। বাকিরা দু চারটে কড়া কথা বলে নিজেদের কাজে মনোনিবেশ করল। আমরা ও ঘাট ছেড়ে কফির খোঁজে বেরোলাম।
বাগবাজারে CCD পাওয়া গেল না। অটো স্ট্যান্ড থেকে বলল শ্যামবাজার। শ্যামবাজারে গুগল ম্যাপ বলল ফড়িয়াপুকুর। আমার পক্ষে পাঁচ মাথার মোড় থেকে অদ্দুর হেঁটে যাওয়া দুরস্ত, তাই হাতে টানা রিক্সা নেওয়া হল। একটা মানুষের ঘাড়ে ( পরুন হাতে) এরকম দুজন পুর্নবয়স্ক লোকের চেপে বসার গ্লানিটা অগ্রায্য করলাম বাধ্য হয়ে। যদিও সাইকেল রিক্সাতে সব সময় চড়ছি, তাতে কোন লজ্জা বোধ করিনা। হাতে টানা রিক্সাতে চড়া সহজ ব্যাপার নয়, চাপিয়ে দিয়ে যখন রিক্সাজ্যেঠু যানটিকে হাতে তুলে নেন , তখন মনে হয় পেছন দিয়ে উলটে যাব। নামার সময়ও সামনে দিয়ে গড়গড়িয়ে পপাত চ হবার সম্ভাবনা থাকে। আমরা সেই রিক্সাতে প্রান হাতে নিয়ে বসে রইলাম আর বাস, ট্রাম, সাইকেল সব কাটিয়ে রিক্সাজ্যেঠু ছুটতে লাগলেন।
হাতে টানা রিক্সাতে এর আগে জীবনে একবারই চড়েছি, এম জি রোড থেকে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত । যাত্রা সেভিং রিক্সা না থাকলে সেদিন সবাই হাতিয়া এক্সপ্রেস চড়ে নেতারহাট পৌঁছে যেত আর আমি পরে থাকতাম কলকাতায়। তাই এর প্রতি আমার কৃতজ্ঞ্তা প্রবল। আমার সহযাত্রীর সেদিন এতে হাতেখড়ি হল, সেও সমান খুশী ও উত্তেজিত। ফড়িয়াপুকুর গিয়ে বোঝা গেল ম্যাপ বুঝতে সামান্য ভুল হয়েছে-- CCD টি রাজা দিনেন্দ্র স্ট্রীটে, সেটা রাস্তার উল্টোদিক।
আরো কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি এবং লোকজন কে জিজ্ঞেস করার পরে (CCD কেউ চেনে না, তবে একজন বললেন এই রাস্তাই ঠিক যদিও গন্তব্য সম্বন্ধে তিনি অজ্ঞ) অটোতে ওঠা ঠিক হল। এবং সমাপতনের মত কফিশপ পৌঁছে গেলাম। এর পরে আর কিছু নেই। খেয়ে দেয়ে ট্যাক্সি করে বাড়ী ফেরা হল।
ek dine koto khabi re!!!
ReplyDeleteHe he.😋😋😋
ReplyDeletebaby's day out....
ReplyDeleteHe he tai bote😋
DeleteDaruun..
ReplyDeleteAre amar star ee pase purbanhi te jabar ichche chilo. Kintu ora only coffee deyna. N we were too full.
ReplyDeletetui just baked teo dhukte parti natun khuleche, hatibagan to sovabazar jabar pothe pore,... rememeber n nxt tm utilise
ReplyDelete