statcounter

Showing posts with label ঘোরাঘুরি. Show all posts
Showing posts with label ঘোরাঘুরি. Show all posts

Sunday, July 23, 2017

মধুচন্দ্রিমা- পর্ব ১- দিল্লী- মানালী- নগর

মান্ডি হাউসের সামনে থেকে কাঁটায়- কাঁটায় সন্ধ্যে ৭.৩০ টায় হিমাচল ট্যুরিজমের বাস ছাড়ল।সামনে ১৪ ঘণ্টার জার্নি। বাস চলল উত্তরের দিকে, শহরের ভীড় কাটিয়ে হাইওয়ে ধরে। পাশে ধূ ধূ মাঠ--বা ক্ষেত আর মাঝে মাঝে বেমানান ভাবে একটা ধাবা কিংবা ম্যাকডোনাল্ডস, কে এফ সি; তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সারি-সারি দেশী-বিদেশী গাড়ি। মাঝখানে একটা ধাবাতে বাস দাঁড়াল, ডিনার এখানেই হবে। তারপর আর কোন বিরতি নেই, রাতের বাস চলল চন্ডীগড়ের মধ্যে দিয়ে হিমাচলের দিকে। আধো ঘুম, আধো জাগরণের মধ্যে পার হয়ে গেলাম বিলাসপুর আর সুন্দরনগর, পাশে চলতে শুরু করল বিয়াস নদী। সামনের ছয়দিনে এই নদী থাকবে আমাদের যাত্রাপথের সঙ্গী হয়ে, কখনো শান্ত, কখনো খরস্রোতা রূপে। ভোরের আলো ফুটতে দেখা গেল বিয়াসের পাশ দিয়ে ধাপে ধাপে উঠে গেছে  ঘন জঙ্গলে ভরা পাহাড়, তার মধ্যে দূরে একটা দুটো লাল টিনের চালওলা বাড়ি। বাস চলল বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে পাহাড়ের আঁকা বাঁকা রাস্তা ধরে; পার হয়ে গেলাম নাম না জানা ব্রীজ, ছোট ছোট লোকালয়। সকাল ৯ টায় বাস পৌছাল মানালীতে, সেখান থেকে আমরা যাব আরো ২০ কি মি দূরে; নগরে (নাগ্গর)।
মানালী থেকে নগর যাবার দুটো রাস্তা;  বিয়াসের দুদিক দিয়ে; একটা শহরের পাশ কাটিয়ে আর অন্যটা শহরের মধ্যে দিয়ে কুলুর দিকে। নগর হচ্ছে কুলুর রাজধানী; দিল্লী থেকে নগর যেতে হলে  মানালীতে না গিয়ে নামা উচিত পাতলিকুলে; সেখান থেকে নগর  ৫ কিমি  দূরে। রাস্তার পাশে আপেল বাগান; ভর্তি হয়ে আছে ছোট ছোট সবুজ আপেলে--পাকতে শুরু করবে আগস্টে। ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে গাড়ী চলল আর মিনিট ৪৫ এ পৌছে গেলাম নগরে।
নগরে আমাদের থাকার কথা নগর ক্যাসেলে। ১৬০০ শতকে কুলুর রাজা বানিয়েছিলেন এই ক্যাসেলটি, যা এখন একটা হেরিটেজ সাইট এবং হিমাচল ট্যুরিজমের হোটেল। কাঠ আর পাথরের তৈরী বাড়িটা কুলু এবং ইউরোপীয়ান মিশ্র ধাঁচে গড়া। 
প্রথম দিন হোটেলে পৌছে ভীড় দেখে হকচকিয়ে গেছিলাম; হেরিটেজ সাইট টা ৩০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে সর্বসাধারণের জন্য খোলা। গরমের ছুটি এখনো শেষ হয়নি; মানালীতে যেমন ভীড়; তেমনি ক্যাসেল দেখতে আসার লোকের বিরাম নেই।  যাত্রার ক্লান্তি, ঝিমঝিমে বৃষ্টি, ঘর তৈরী নয়; সব মিলিয়ে মেজাজটা আস্তে আস্তে খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। মেজাজ ঠিক হল ক্যাসেল রান্নাঘরে তৈরী অপূর্ব মাশরুম 'অন টোস্ট আর চীজ ওমলেট খেয়ে; তার সঙ্গে কফি। খিদে মিটতেই আমরা ফোটো সেশন শুরু করে দিলাম; নিজেদের আর সামনে পাহাড়ের।
বিকেলের দিকে বাইরের লোকের ভীড় কমে গেল; তখন একটা টুঁ শব্দ নেই চারপাশে। সামনের 
বারান্দার নিচে একটা পাথর বাঁধানো উঠোন; তার সামনে ধাপে ধাপে নেমে গেছে নগরের উপত্যকা; জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে বিয়াস নদী; আরো সামনে উঠে গেছে পাহাড়ের সারি- সবুজ থেকে নীলচে হয়ে গেছে মাথার দিকে, সকালে মেঘে ঢাকা ছিল, এখন পরিস্ফুট হয়েছে। নগর ক্যাসেলের চারদিকে সবুজে ঢাকা পাহাড়, তার মধ্যে লাল- সবুজ ছাদওলা বাড়ী, দূরে গাছের মাথায় আটকে
আছে ধোঁয়া ধোঁয়া মেঘ। সামনের পাঁচদিন আমরা থাকব এখানে--- মেঘ রোদ আর বৃষ্টি লুকোচুরির মধ্যে---- প্রায় স্বর্গের কাছাকাছি।
পাহাড়ে দেরীতে রাত হয়, যখন সন্ধ্যে হল তখন প্রায় আটটা বাজে। সামনে দূরে মিট মিট করে জ্বলছে শহরের আলো, ঠিক যেন জোনাকিরা জ্বালিয়েছে হাজার প্রদীপ।
পরদিন সকালে শুরু হল রোদ আর মেঘের খেলা। সামনের সব চেয়ে বড় পাহাড়ের মাথায় মেঘগুলো ভীড় করে আছে; আর তার ঠিক বা দিকে খাঁজ থেকে উঁকি মারছেন সূর্য। নীচে জমা হয়ে আছে সাদা সাদা মেঘ; বিয়াসের উপরে জমাট বাঁধছে। আরো দুরের পাহাড়ে তখনো নীলচে আভা; তার মাঝখান দিয়ে নেমেছে নাম না জানা নদী। কিছুক্ষ্ণ পরে আরো মেঘ এসে ঢেকে দিতে লাগল সব পাহাড়গুলো কে, ঠিক যেন নাটক শেষে মঞ্চে পরদা পড়ে গেল সামনে।








প্ল্যান ছিল যে কোনো প্ল্যান থাকবে না; ইচ্ছে হলে টুরিস্টের মত ঘুরব; ইচ্ছে না হলে নগরে বসে থাকব।প্রথম ইচ্ছেটার জয় হল; লাঞ্চের সময় গিয়ে পৌছালাম মানালীতে। মানালী শহরটা ছোট, সরু সরু রাস্তা এঁকে বেঁকে গেছে, তার মধ্যে হোটেল আর দোকানের ভীড়।ইন্টারনেটে আগে থেকে দেখে ঠিক করা ছিল কাসা-বেলা-ভিস্তা তে খাব। ওল্ড মানালীতে সুন্দর সাজানো গোছানো দোকান; পাশে আর ওপরে থাকার জায়গা। আমরা খেলাম চিজ কেক,  ব্র ুশেতা আর কাঠের উনুনে বানানো (মেনুতে তাই বলা ছিল) ফোর সিজন পিজ্জা। 



খাবার খেয়ে আমরা হাঁটতে শুরু করলাম। ওল্ড মানালীতে ভীড় অপেক্ষাকৃত কম, বৃষ্টি ভেজা রাস্তা আর মাথার ওপরে পাইন আর ঝাউ গাছেরা মাথা গোঁজাগুঁজি করে দাঁড়িয়ে আছে; একটু দূরে পাহাড়ের গায়ে আরো সবুজ--আরো আরো বেশি ঘন। হেঁটে হেঁটে যখন গেলাম হাড়িম্বা মন্দিরে তখন অঝোরে বৃষ্টি নেমেছে। মন্দিরে চত্বরে লম্বা লাইন পড়েছে পুজো দেবার- সেই দলের আমরা অংশ নই। মন্দির থেকে একটু দূরে ছোট একটা মিউজিয়াম, সেখানে কিছুক্ষন থেকে ফিরে এলাম মল রোডে। মল রোডে যেন মেলা বসে গেছে; গিজগিজ করছে লোকের ভীড়ে। সেখান থেকে গাড়ি করে বিকেল বিকেল ফিরে এলাম  হোটেলে। 

রাত ১২ টায় বত্রিশে পা দিলাম আমি। ক্যাসেলের পাশে রাগিনী ক্যাফের একটা ছোট্ট দোকান--নাম লাভাজা; সেখান থেকে কিনে আনা হয়েছিল জার্মান বেকারীতে তৈরী অসামান্য স্বাদের ক্যারট কেক; একদম ফ্রেশ। সেটা খাওয়া হল রাতের বেলা। পরদিন যাবার কথা জানা ফলস দেখতে (চলবে)।

Thursday, February 2, 2017

বইমেলা ২০১৭

বইমেলা যখন ময়দানে হত, হাতে গুনে দু-তিন বার গেছিলাম। বইমেলা তারপর চলে এল বাইপাসের কাছে, মাঝের এক বছর সল্টলেকে হল। কাছে হয়ে যেতে আমি নাচতে নাচতে গেলাম। স্কুল- কলেজে বই কেনার থেকে বই দেখাটাই বেশী হত। পড়ার জন্য লাইব্রেরী ভরসা। তবে বইমেলার কল্যাণে বার্ষিক বই কেনার একটা ব্যাপার ছিল।
তারপরে বই কেনার ফ্রীকুএন্সি বেড়েছে (পড়ার কতটা বেড়েছে জানি না)। সারাবছর বাড়ীতে বসে ইন্টারনেটে বই কেনা হয়। বইমেলার উপরে নির্ভরতা কমেছে। কাজের ব্যস্ততা ও বেড়েছে।  মেলায় যেতে  বইপ্রেমী বা হুজুগে সঙ্গীরও দরকার হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন কারণে তিন বছর আগে লাস্ট বইমেলায় যাওয়া হয়েছিল।

এবছর না ছিল কাজের ব্যস্ততা। আর "এবছরে না হলে আসছে বছর তো আছে" সেই নিশ্চয়তা কমে এসেছে। তাই দু- তিন দিন ধরে যাচ্ছি- যাচ্ছি করে শেষমেষ ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দুপুরবেলা মেলায় উপস্থিত হলাম।
উদ্দেশ্য দুটি---- বই দেখা আর বাংলা বই কেনা।ঘন্টা তিনেকে যা যা দেখলাম তার সংক্ষিপ্তসারঃ

১) রাশি রাশি বইয়ের স্টল---যেরকম থাকে। অনেকগুলোই প্যাভিলিয়নের মধ্যে ভাগ করা। ভীড় আছে তবে থিক থিকে ভীড় নয়। পছন্দ মতো বই হাতে নিয়ে দেখা যাচ্ছে।
২) লোক সঙ্গীত হচ্ছে দুটো জায়গায়, সবাই দাঁড়িয়ে শুনছে।
৩) থিমঃ কোস্টারিকা। সেখানে সেলফি তোলার ভীড় জমেছে।
৪)  বড় বড় ড্রামে খাবার জলের প্যাকেট রাখা আছে।তাছাড়া ফুড কোর্ট আর অন্যান্য খাবারের দোকান তো আছেই।
৫) মেইন অডিতে নবনীতা দেবসেন এবং "সই" এর মেম্বাররা এসেছেন--সবাই নিজের লেখা পাঠ করছেন। হল যদিও প্রায় ফাঁকা।
৬) ছবি-কার্ড- আর অজস্র টুকিটাকি (মায় কানের দুল) বিক্রী হচ্ছে।

আরো ঘটনা ঘটছিল , তবে বই দেখা- কেনার চক্করে ভালো করে লক্ষ্য করতে পারিনি।

বাকি ছবি দিলামঃ
দিনাজপুরের কান্তজী মন্দিরের অনুকরণে বানানো

লোক গান হচ্ছে

সই এর সভা

পট আঁকা হচ্ছে



 লুটোপুটি করে কেনাকাটি
এখন কাকে ছেড়ে কাকে আগে পড়বো সেটা নিয়ে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে।


Tuesday, July 26, 2016

গত সপ্তাহে


জীবনের আল্টিমেট উদ্দেশ্য হল  বি হ্যাপি, বি কন্টেন্ট। এবার সবার খুশি থাকার হাজার কারণ হতে পারে। কেউ সাজুগুজু করে খুশি, কেউ আবার পাহাড়ে উঠে। কেউ দুপুরে ঘুমিয়ে, অথবা আপিসে প্রোমোশন পেয়ে, কেউ আপিস কেটে বেড়াতে গিয়ে। তবে ভাল ভাল খেয়ে মোর ওর লেস সবাই খুশি হয় ( অন্তত আমার আসেপাশে যারা আছে তারা তো হয়)। এর জন্য ভালো ভালো রান্না করে বাড়ীতে বসে খাওয়া যায়  আবার নাচতে নাচতে রেস্ট্যোর‍্যান্টে গিয়েও কাজটা সমাধা করা যায়।  প্রথমটা খুবই পরিশ্রম সাধ্য (আর আমি আর কই রান্না করি)। তাই দ্বিতীয়টাই বাছা হল। 

এদিকে আবার "সিক্রেট লাইফ অফ পেটস" রিলিজ করে হল থেকে চলে যাবে যাবে করছে; এটা দেখব বলে মাস চারেক ধরে ওত পেতে আছি। হাতে সময় খুব বেশী নেই, দুদিন বাদে অপরেশন হয়ে জানিনা কতদিন শুয়ে থাকতে হবে। সব মিলিয়ে একটা জ্রুরী অবস্থা। বুক মাই শো দেখে শো টাইম কনফার্ম করে খাবার দোকান খোঁজা হল। আর ঝটাপট প্ল্যান হয়ে গেল- -- দুপুরে বোম্বে ব্রাসারিতে লাঞ্চ, তার পর সিনেমা দেখে মলে ঘোরাঘুরি এবং বাড়ী ফিরে আসা।

পার্ক সার্কাস এর মুখে যে বিশাল মল হয়েছে, যাতে এতদিনে আমি বাদে কলকাতার সমস্ত লোক গিয়ে ঘুরে দেখে কেনাকাটি করে খেয়ে দেয়ে ফিরে এসেছে, সেখানে যেতে হল। এর আগে বহুবার সামনে থেকে বাস বা ট্যাক্সি করে হুস করে চলে গেছি , , কিন্তু ভেতরে ঢোকার দরকার পরেনি কোনোদিন। এবার এই সিনেমার কল্যাণে সেটা হল।

পাঁচ তলায় খাবারের দোকান। বেশ সুন্দর ছবি দিয়ে সাজানো। হলুদ রঙের কাঠের প্যানেল করা বড় বড় কাচের জানলা। ছবি ছাড়া দোকান সাজাতে ব্যবহ্ৃত হয়েছে পুরনো কাপ প্লেট হাতা খুন্তি থালা বাটি গ্লাস হামান দিস্তে নারকোল কুড়ানী ই্ত্যাদি।  ন্তুন দোকানে একটু পুরোনো ছাপ আনার চেষ্টাটা  দেখে মন ভালো হয়ে গেল।

খাবার দুরকম- বাফেট পাওয়া যায়, আবার আ-লা-কারতে ও। আমরা বাফেট নিলাম। একে বলা হয় ক্যান্টীন স্টাইল, কেন একটু পরে বোঝা গেল।
কাচের গ্লাসে এল স্যুপ--দেখতে দুধ দেওয়া চা এর মতন। তার সঙ্গে টা এল তন্দুরী চিকেন, পেঁয়াজ দেওয়া পনীর (পনীরকে টুকরে) , কারিপাতা দেওয়া মাছ ভাজা, চিকেন কাটলেট, বড়াপাও, মুড়ি-চানাচুর আর পেঁয়াজী। এর সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ, লেবু আর ধনে পাতার চাটনি। টা গুলো সব স্টীলের প্লেটে --এই হল গিয়ে ক্যান্টীন স্টাইল।



পনির আর তন্দুরী চিকেনটা অসামান্য ছিল--আমরা দুবার করে নিলাম। 

এই সব খেতে খেতে মেনকোর্স এসে গেল। ডাল, মাটন কিমা, গার্লিক নান , প্রন কারি,  বোম্বে স্টাইল   চিকেন বিরিয়ানি। এত ভাল মাটন কিমা আমি কখনো খাইনি, মুখে দিতেই গলে গেল যেন। বিরিয়ানি খেতে মশলা দেওয়া চিকেন ভাতের মতো, আমার ভালো লেগেছে। 
এখানের বাফেটের বিশেষত্ব হল খাবার আগে থেকে রান্না করে সাজিয়ে রাখা থাকে না, সব টেবিলে এসে দিয়ে যাচ্ছিল। আমার মত কুঁড়ের জন্য আইডিয়াল।






এরপর এল আইসক্রীম আর চকোলেট পুডিং। আর তিন রকম লজেন্স। খাবার শেষ করে বিল মিটিয়ে আমরা সিনেমা দেখতে ছুটলাম।



সিক্রেট লাইফ অফ পেটসঃ

ম্যাক্স হচ্ছে একটা জ্যাক রাসেল টেরিয়ার, যে থাকে কেটির সঙ্গে। ম্যাক্সের জীবন ভালোই কাটছিল যতদিন না কেটি নিয়ে এল ডিউককে।  দুটো মিলে হারিয়ে যাওয়া, না- পোষা জন্তুদের সিক্রেট সঙ্ঘঠনের হাতে পরা, ম্যাক্সের বন্ধুদের তাকে খুঁজতে বেরোনো, গল্পের শেষে সবার বাড়ী ফিরে আসা এই নিয়ে দেড় ঘণ্টার জমজমাটী মজা।


বইপত্রঃ

শপিং মলে চারদিকে খালি সেল সেল আর সেল। এই সব দেখে দিগবিদিক শূন্য হয়ে আমরা বেসমেন্টে নেমে গেলাম আর চারটে বই কিনে ফেললাম।
১) নবনীতা দেবসেন - গল্পসমগ্র ১
২) বানী বসু- মৈত্রেয় জাতক
৩) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথা
৪) সুপার থার্টি

আজকে আবিস্কার করলাম গল্পসমগ্র১ এর লাস্ট চারটে পাতায় কোনো প্রিন্ট নেই।


কলকাতা  স্কাইলাইন


সংগ অফ ইন্ডিয়া ঃ Song of India (a.k.a. Dracaena reflexa)ঃ

ঢোলুর পরে এটি আমার নতুন সঙ্গী, গিফটে পেয়েছি। নীল রঙের বো বাঁধা ঝুড়িতে চেপে তিনি এসেছেন, এখন আমার জানলায় বসে থাকেন। বৃষ্টিতে আস্তে আস্তে পাতা নড়ান আর খুশি থাকেন।












Tuesday, June 28, 2016

১৪ ই জুন (মঙ্গলবার) দিনটা

তিন মাস বাড়ীতে বসে থাকলে আর তিন মাসে গুনে গুনে ১১ দিন বাড়ী থেকে বেরনো হলে অন্য লোকদের কি হয় আমি জানি না। তবে আমার যেটা হল তাকে পাতি বাংলায় বলে ডিপ্রেশন।

ডাক্তারবাবু আগেই একটা ভারি নামওলা বলেছিলেন  --- anticipatory anxiety. তবে সবাই হাসল---এতো পরীক্ষার আগে সবার হয়েছে। আমি হাসলাম না তবে জেদ ধরে রইলাম যে ফালতু ঘুমের ওষুধ খাব না। বার দুয়েক ছড়িয়ে ফেলার পর সেটা কেটে ও গেল। আর তার ভাই এসে হানা দিলেন।
অকারণ রাগ আর অকারণ কান্না-- দুটোই বিয়ন্ড কন্ট্রোল। তখন নতুন ওষুধ ঠিক হল--- বেড়োনোর মহৌষধী।

তাই সেজে গুজে একটা মেঘলা মঙ্গলবার বেড়িয়ে পড়া গেল।
প্রথমে খাদ্যানুসন্ধান, তার জন্য অবশ্য জোমাটোই কাফি। বাড়ির কাছে অতি পুরোনো হাটারির অপেক্ষাকৃত নুতন রেস্টোর‍্যান্টে গিয়ে লাঞ্চ করা গেল। হাটারিতে বহুকাল আগে খেয়েছিলাম, কিছুই মনে ছিলনা খাবারের সম্বন্ধে-- দেখা গেল দুজনের জন্য অপর্যাপ্ত অর্ডার হয়েছে---কিছুটা বাড়ী নিয়ে যেতে হল।
চিকেন ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস (Chicken in sweet and sour sauce)

মিক্সড মেইফুন (Mixed meifoon)

লাঞ্চের পরে কি হবে সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। দৌড়ে বাড়ী নাকি ভ্রমণ ! দেখা গেল ওয়েদার এবং বাকি সব কিছু ভ্রমণের পক্ষে রায় দিচ্ছে।
ড্যানিশ লেখক আইজাক ডিনেসিনের মত মেনে  " The cure for anything is salt water: sweat, tears or the sea" যদি সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে পা দোলানো যেত তাহলে আমার অশান্ত মনের শান্তি  হত পুরোপুরি। কিন্তু তার যখন উপায় নেই, তখন গঙ্গার ঘাটই ভরসা। তাই যাওয়া হল আদি অকৃত্রিম বাগবাজারের মায়ের ঘাটে।

কলকাতার এই জায়গাটা বেশ অন্যরকম , অন্তত আমার চোখে। ট্রেনলাইন পার হয়ে ঘাট। তাতে বসে আছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ জন। ছবি আঁকা ছোকরা, দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গল্প করা জুটী, গঙ্গা জল নিতে বা নিত্যদিন ঘাটে গল্প করতে আসা বয়স্ক লোকজন, স্নানার্থী এবং জলে ঝাঁপ দিয়ে পয়সা খোঁজা ছেলে এবং সেলফি শিকারীর জমায়েত হয়েছে। তার মধ্যে গিয়ে আমরা ঘাটের উপরে বসে পড়লাম। আর অপার শান্তি। বিকেলে পড়ন্ত আলোয় চিক চিক করছে জল- তাতে সোনালী রঙের ছোঁয়া। জলে ছোট ছোট নৌকো ভাসছে, আপাতত তাদের কোথায় যাবার তাড়া নেই। একটা  মাল ভর্তি স্টিমার ভেসে গেল। নদীর উলটো দিকে বড় বড় গম্বুজের মতন দেখা যাচ্ছে--সেটা কি আমি জানি না।
                               



কিছুক্ষন জলের দিকে তাকিয়ে মনের ক্লান্তি ধুয়ে দেবার চেষ্টা করা গেল। আমাদের পাশে বসে থাকা ভদ্রলোক জোয়ার ভাঁটার খবর দিতে লাগলেন। এরকম সময়ে  মুর্তিমান রসভঙ্গের মতন দুই ভদ্রলোক হাজির হলেন হাতে প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে। তাদের দেখেই ঘাটে বসে থাকা এক্সপিরিয়েন্সড লোকের এখানে প্যাকেট ফেলা মানা আছে বলে চেঁচাতে শুরু করল। তারাও আমরা লোকাল লোক সব জানি, বলে দাবী করলেন। শেষে একজন রণে ভঙ্গ দিয়ে প্যাকেট যথাস্থানে আর আরেক জন "মানছি না মানব না' করে প্যাকেট জলে ফেললেন। বাকিরা দু চারটে কড়া কথা বলে নিজেদের কাজে মনোনিবেশ করল। আমরা ও ঘাট ছেড়ে কফির খোঁজে বেরোলাম।

বাগবাজারে CCD পাওয়া গেল না। অটো স্ট্যান্ড থেকে বলল শ্যামবাজার। শ্যামবাজারে গুগল ম্যাপ বলল ফড়িয়াপুকুর। আমার পক্ষে পাঁচ মাথার মোড় থেকে অদ্দুর হেঁটে যাওয়া দুরস্ত, তাই হাতে টানা রিক্সা নেওয়া হল। একটা মানুষের ঘাড়ে ( পরুন হাতে) এরকম দুজন পুর্নবয়স্ক লোকের চেপে বসার গ্লানিটা অগ্রায্য করলাম বাধ্য হয়ে। যদিও সাইকেল রিক্সাতে সব সময় চড়ছি, তাতে কোন লজ্জা বোধ করিনা।  হাতে টানা রিক্সাতে চড়া সহজ ব্যাপার নয়, চাপিয়ে দিয়ে  যখন রিক্সাজ্যেঠু যানটিকে হাতে তুলে নেন , তখন মনে হয়  পেছন দিয়ে উলটে যাব। নামার সময়ও সামনে দিয়ে গড়গড়িয়ে পপাত চ হবার সম্ভাবনা থাকে।  আমরা সেই রিক্সাতে প্রান হাতে নিয়ে বসে রইলাম আর বাস, ট্রাম, সাইকেল সব কাটিয়ে রিক্সাজ্যেঠু ছুটতে লাগলেন। 

হাতে টানা রিক্সাতে এর আগে জীবনে একবারই চড়েছি, এম জি রোড থেকে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত ।  যাত্রা সেভিং রিক্সা না থাকলে সেদিন সবাই হাতিয়া এক্সপ্রেস চড়ে নেতারহাট পৌঁছে যেত আর আমি পরে থাকতাম কলকাতায়। তাই এর প্রতি আমার কৃতজ্ঞ্তা প্রবল। আমার সহযাত্রীর সেদিন এতে হাতেখড়ি হল, সেও সমান খুশী ও উত্তেজিত। ফড়িয়াপুকুর গিয়ে বোঝা গেল ম্যাপ বুঝতে সামান্য ভুল হয়েছে-- CCD  টি রাজা দিনেন্দ্র স্ট্রীটে, সেটা রাস্তার উল্টোদিক।
আরো কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি এবং লোকজন কে জিজ্ঞেস করার পরে (CCD কেউ চেনে না, তবে একজন বললেন এই রাস্তাই ঠিক যদিও গন্তব্য সম্বন্ধে তিনি অজ্ঞ) অটোতে ওঠা ঠিক হল। এবং সমাপতনের মত  কফিশপ পৌঁছে গেলাম। এর পরে আর কিছু নেই। খেয়ে দেয়ে ট্যাক্সি করে বাড়ী ফেরা হল। 















Saturday, June 25, 2016

অ্যান ইউসুয়াল ল্যাব আউটিং (An usual lab outing)

এরকম বহুবার হয়েছে লাষ্ট ৬ বছরে, কিন্ত ু তখন ব্লগ ছিলনা তাই লেখার প্রয়োজনও ছিলনা। আর তখন এই ল্যাবের দিনগুলো দ্রুত বেগে শেষ হয়ে যাচ্ছিলনা। তাই এটা একটা এসেনশিয়াল ল্যাব সংক্রান্ত পোষ্ট, যেটা পড়ে ভবিষ্যতে আমার লজিক-নষ্ট হবে।

দেশ এবং হয়ত কাল নির্বিশেষে গ্রাজুয়েট স্ট ুডেন্টদের মধ্যে  যা যা মিল পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হল পারপিচুয়াল হাঙ্গার---- না না জ্ঞানের ক্ষুধার কথা আমি বলছি না। তা নিশ্চয় আছে বেশির ভাগের মধ্যে, সবাই তো আমার মতন নয়। আমি বলছি নেহাতই পাতি শারীরিক ক্ষুধার কথা, যাকে মেটানোর জন্য এত পড়াশুনা, পরীক্ষা দেওয়া, চাকরি করা এবং তিন বেলা পাত পেড়ে খেতে বসা। তবে এই খাবার ইচ্ছেটা অনেক সময় মানসিকও বটে। অনেক সময় বলাভুল কারণ প্রথমত শরীর আর মন দুটো আলাদা একেবারেই নয় আর ভাল খাবার খেলে যে পরিমাণ মানসিক তৃপ্তি আসে, যাকে আজকাল বলা হচ্ছে গ্যাস্ট্রোইনস্টেটিনাল প্লেজার সেটা অতীব সাঙ্ঘাতিক একটা এক্সপিরিএন্স। আর মন ভাল না থাকলে কাজ ভাল কি করে হবে!

তাই  বাইরে খাওয়া চলতেই থাকে, কারণ ক্যান্টীন তো এখন প্রায় বাড়ীর মতন। আর মানুষের তো তিনটে হাত-- ডান, বাম আর অজুহাত। তাই বাইরে খেতে যাবার কারণের অভাবও হয়না কখনো।
এক্সপেরিমেন্ট কাজ করার আনন্দ বা না করার দুঃখ, পেপার পাঠানো, অ্যাক্সেপ্টেন্সের কিংবা রিজেক্টেড হবার সেলিব্রেশন ( বস বলেছে ওয়ান শুড সেলিব্রেট দেয়ার ফেলিওর টূ), অনেক দিন যাইনি, বা আজকে ল্যাব যেতে/ কাজ করতে ইচ্ছে করছে না--খেতে গেলেই হয়----- রিজনের লিষ্টটা এন্ডলেস। আর যেতে না পারলে অর্ডার করলেই হল।

সেই যে ২০১০ এ কাফিলা যাওয়া থেকে শুরু হয়েছিল, সেই ্ট্র্যাডিশন বজায় রেখে, বস সমেত অথবা ছাড়া (কারণ বিভিন্ন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ মিটিং এর ব্যস্ততা); আমরা জয়যাত্রায় যাচ্ছি এরকম হাবভাব নিয়ে ফুড আউটিং চালাতে থাকি। তবে রিসেন্ট ২৯ মে যেটা হল সেটা রু এর অ্যচিভমেণ্টের সেলিব্রেশন--- আর ট্রিটও জয়-অধিকারীনির পক্ষ থেকে। তাই বাকিরা নাচতে নাচতে গেলাম, বস গেলেন না;  হরলিক্সের বাচ্চার মতন  "আমি খুব বিজি বলে"।

যাওয়া হল ল্যাবের কাছেই চাওম্যানে--সেফ, ট্রায়েড অ্যান্ড টেস্টেড। দুপুর ১ টায় পুরো রিক্সাহীন রাস্তায় কিছুক্ষ্ণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে ভগবান প্রেরিত ভাবে একটা ব্যাটারি চালিত রিক্সা- অটোর সংকর বস্ত ুউদয় হল। নাকি পাঁচজন চড়তে পারে--- সাঙ্ঘাতিক ওভার এস্টিমেশন সেটা। তবে যাদের মন্শচক্ষে ৫/৭ মিনিট রিক্সায় ঝোলার ইন্সট্যান্ট রিওযার্ড হিসাবে চাইনিস নাচানাচি করছে , -- তাদের কাছে এ আর এমন কি কঠিন কাজ।

রৌদ্র করোজ্জল দিন  



হাইব্রিড ব্যাটারি রিক্সাতে আমরা


দেখে যতটা সিম্পল মনে হচ্ছে ব্যাপারটা তার চেয়ে জটিল। রিক্সায় দুরকম সিট--- নর্মাল ফর অ্যাডাল্ট আর টাইনি ফর কিডস (মেরে কেটে ১০/১২ বছরের বেশি নয়)। নর্মাল সিটেও আমাদের মতন হেভি ওয়েটদের দুজন ধরে। তাতে ৩ জন আর কিডস সিটে ২ জন (পা বাইরে ঝুলিয়ে বসে রয়েছে)। আর চালাও পানসী থুড়ি রিক্সা চাওম্যান।


বৃথা বাক্যব্যয় করে লাভ নেই, কি কি খেলাম তার ছবি দিচ্ছি।

চিকেন লেমন করিয়েন্ডার স্যুপ (chicken lemon coriander soup)

সি ফুড স্যুপ (sea food soup)

স্টাইর ফ্রায়েড চিকেন (stir fired chicken)
ক্রিপসি কনজী চিকেন (crispy conjee chicken)

চিকেন মোমো (chicken momo)
সিঙ্গাপুর মেফুন আর ফিশ ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস (Singapore meifoon and chicken in sweet and sour sauce)
বেরোনার সময় বৃষ্টি এসে গেল--তাই জি এর আর শর্মা গিয়ে গোলাপ জামুন খাওয়া হল না। অটো করে ল্যাব ফেরা হল।


এত খাবার খেয়ে চা/ কফি না হলে কি করে কাজে মন বসবে।

VECC  যাওয়া হচ্ছে (সাদা জামাতে বস)


মেঘলা বিকেলে  SINP এর গেট

 র‍্যান্ডম
কেউ গেল সাতসমুদ্রের পারে পোস্টার দিতে আর বাকিরা বাড়ীতে বসে পা দোলাল আর ক্যাডবেরি খেল যত খুশী


দিনটা ভালো কাটল। ইউসুয়াল ও ভালো , লম্বা হোমস্টের পরে তো সুপার ভাল।