ঘুড়িটা উড়ছিল। লাল রঙের। ল্যাজটা লম্বা। কালো দাগ কাটা মতন। নারকোল গাছের পাশ দিয়ে উড়তে উড়তে, গুবলুদের বাড়ির ছাদের উপরে ---আরে আরে এক্ষুণি অ্যান্টেনায় লেগে যেত, জাস্ট বেঁচে গেল।
তাতাই জানলায় বসে ছিল। ঘুড়িটাকে খুব মন দিয়ে দেখছিল। সামনে বাংলা রচনা খাতা খোলা, পাতা গুলো ফরফর করে উড়ছিল। তাতাইয়ের রচনায় মন ছিল না।
সুপুরি গাছে দড়াম করে শব্দ হল। তাকিয়ে দেখে একটা বড় হলদে হয়ে যাওয়া পাতা পড়েছে।পাতায় নীচে হলুদ রঙের ঝাড়নের মতন লুকোনো ছিল এখন সেটা দেখা যাচ্ছে। তাতাই জানে ওটাকে সুপুরির ঝুরি বলে, পরে ওটা আস্তে আস্তে হলুদ থেকে সবুজ হবে, তাতে সুপুরি ধরবে।
লাল ঘুড়িটা আবার গোত্তা খেল দূরে একটা গাছের মাথায়। আরেকটা হলুদ ঘুড়ি এসেছে, লাল ঘুড়ির পাশে পাশে উড়ছে। হলুদটা লালের চেয়ে একটু বড়ো।
মাঠের গায়ের সাদা বাড়িটার সামনে একটা সাইকেল রাখা। ও বাড়িতে ভুত আছে, কেও জানে না; শুধু তাতাই জানে। দিনের বেলা তাও ঠিক আছে, কিন্ত ু রাতে ওদিকে দেখলে গা ছমছম করে। যেদিন ঝড়ের সময় লোডশেডিং হয়েছিল, বিদ্যুৎ এর আলোয় সাদা বাড়িটা দেখে খুব ভয় করছিল।
হলুদ ঘুড়িটা লাল ঘুড়িকে তাড়া করেছে। তাড়া খেয়ে লাল ঘুড়ি তরতর করে উপরে উঠছে, পেছন পেছন হলুদ ঘুড়ি। এই ধরে ফেলল, না না লাল ঘুড়ি বাঁ দিকে ঘেষে হলুদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেড়িয়ে গেল।
রচনা খাতার পাতা উড়ছে---মাছের আত্মজীবনী, খালি নামটাই লেখা হয়েছে খাতায়।
চোখ আর মন দুটোই ঘুড়ির দিকে।
খুব হাওয়া দিতে শুরু হল। ঘুড়ি দুটোই এলোমেলো ভাবে উড়ছে এবার।
মাঠের শেষে আম বাগানের দিকে চলে যাচ্ছে দুটো। মনে হচ্ছে গাছে আটকে যাবে, কিন্ত ু না, লাল হলুদ কে তাড়া করল। হলুদও চালাক কম নয়, বোঁ করে নীচ দিয়ে বেড়িয়ে গেল।
শিশি- বোতল ওলা যাচ্ছে---"শিশি- বোতল"। দূরে ঘন্টাঘরে চারটে বাজল।
মাঠে যাবার সময় হয়ে গেল।
রচনা পড়ে রইল--না লেখা।
তাতাই এর এখন মাঠে যাবার তাড়া, সবাই চলে আসবে।
নীল আকাশে লাল- হলুদ ঘুড়ি দুটো উড়ছে। দূর থেকে দূরে দিগন্তের দিকে।
Absolutely loved it!!! Took me back to my childhood days when this was an everyday scene.... The visions, the sounds, the emotions, even the homework :) ; you have captured them all very beautifully.
ReplyDeleteThank you😊
ReplyDelete