হুড়মুড় করে হ্যারি পটারের ৮ ন ং টা শেষ করে যখন হাঁপ ছাড়ছি, দেখলাম বুক শেলফের মধ্যে থেকে না পড়া বইগুলো আমার দিকে কটমট করে চেয়ে আছে। একে অন্যকে ঠেলাঠেলি করে বলছে এই যে এসে গেছে, তিড়ি ং বিড়িং করে কিনে সাজিয়ে রাখুনি। এই কথাটা শুনে যেই বুক সেলফে ধুলো ঝাড়ার নাটক করে কান পেতেছি, শুনি একদম কোণে সাজিয়ে রাখা ডরিস লেসিং এর বইটা তার পাশের মুরাকামিকে বলছে, "আরে ছোঃ--- খালি কিনলেই তো হয় না, পড়ার যোগ্যতা লাগে।" আর মুরাকামি ব্যাটা পুরো অকৃতজ্ঞের মতন সায় দিচ্ছে। স্পষ্ট শুনলাম পাশ থেকে ডালরিম্পেলের বইদুটো বিশ্রী ভাবে খ্যা খ্যা করে হাসছে।
ভেবেছিলাম দুটো সিনেমা দেখে শুয়ে থাকব। কিন্তু এইসব বাজে মন্তব্যে হঠাৎ করে রাগ হয়ে গেল।
চেঁচিয়ে বললাম, "আরে পড়ব না নাকি...না হয় বছর তিনেক আগে কিনেছি--- এখনো ঠিক সু্যোগ করে উঠতে পারিনি। আর পড়ছিনা তাতো নয়। এই আদিচিকে জিজ্ঞেস করে দেখ-- কিনে সঙ্গে সঙ্গে পড়ে ফেলেছিলাম কিনা।"
আদিচি বেচারা ভালোমানুষের মতন আমাকে একটু সাপোর্ট করতে যাবে-- অমনি আর কে নারায়ণ বলে উঠল "সঙ্গে সঙ্গে মোটেও নয়-- ৬ মাস পরে। আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারবে না।"
অমনি বাকি না পড়া বইরা চোখ পাকিয়ে নাক কুঁচকে আমাকে ধমকাতে শুরু করে দিল।
সব চেয়ে বেশি চেঁচালো এম অ্যান্ড বিগ হুম, স্যালভেশন অফ আ সেন্ট আর রবীন্দ্র উপন্যাস সমগ্র । তাদেরকে তোল্লাই দিতে লাগল হেমিংওয়ের ফেয়ারওয়েল টু দ্য আর্ম আর কেন কেসির বইটা। এই দুটো বই কিছুটা পড়ে রেখে দিয়েছিলাম বলে ওদের খুব রাগ কিনা।
হঠাৎ করে বুক শেলফের মধ্যে একটা বিপ্লব শুরু হয়ে গেল। না পড়া বইরা পড়ে ফেলা বইদের কাছ থেকে পিটিশনে সাইন জোগাড় করতে লাগল।
নানা রকমের স্লোগান উঠল---
১) বছরের পর বছর ধরে বই কিনে না পড়ে রাখা চলবে না।
২) বইয়ের "রেড" লিষ্টে ঢোকার অধিকার মানতে হবে।
৩) বইয়ের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না। ইত্যাদি ইত্যাদি।
একদম নতুন আসা বইগুলো দেখলাম ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে, কেন ফলেটের বই ওদের বলছে--- "আগে আমরা ;বুঝেছিস।"
সব কান্ড দেখে আমার মাথা ঘুরছিল। আর বইদের দাবী কিছু ভুলও নয়--তাই একটু গিল্ট ও ফিল হচ্ছিল। তখন এই হইচইয়ের মধ্যে শুনতে পেলাম লীলা মজুমদার রচনাবলী আমাকে বলছে, "যেগুলো আগে কিনেছ সেগুলো পড়ে ফেল না বাছা। ওদের কি সারাক্ষণ শেলফের মধ্যে থাকতে ভাল লাগে। তুমি পড়ছো এই ছুতোতে কি সুন্দর ওরা একটু ঘুরে বেড়িয়ে আসে।"
এই চেঁচামেচিতে ভয় পেয়ে হঠাৎ করে উইন্ড আপ বার্ড ক্রনিকল কেঁদে ফেল্ল। আর বলে উঠল "পার্পল হিবিস্কাস ল্যাবে বেড়াতে গেছিল...আমার ও ল্যাব দেখতে ইচ্ছে করছে।"
তখন আমি বইদের বল্লাম "ঠিক আছে বাবা----- এই মুরাকামিকে বের করলাম, আস্তে আস্তে তোমাদেরও নিয়ে যাব ল্যাবে। আর রাগ করতে হবে না।" পাকদন্ডী আর ম্যানস সার্চ ফর মিনিং আমার হয়ে বাকিদের কাছে খুব ক্যাম্পেন করতে শুরু করল। রবীন্দ্র উপন্যাস সমগ্রও ওদের কে সাপোর্ট করল। এতে বেশির ভাগ বই শান্ত হয়ে গেল।
যদি ও ডিসগ্রেস মুখ বেঁকিয়ে বলল-- "আই ডোণ্ট বিলিভ হার।" কেন কেসিও তাতে সায় দিল।
তবে বাকি বইরা হাসি মুখে মুরাকামিকে টা টা ক রল। এখন সে আমার সঙ্গে বিছানায় বসে আছে।
ভাবছি এবার সত্যিই " টু রিড" লিষ্টের বইগুলোকে পড়ে ফেলতে হবে। আর ওদের রাগানো যাবে না।
আমার রিড আর টু রিডের অনেকখানি |
আপনাদের "টু রিডের লিষ্ট" কত বড় ?? বয়সে বা সাইজে!
বই কিনে সঙ্গে সঙ্গে পড়ে ফেলেন নাকি আমার মত রেখে দেন ??
Aaj e kichu boi order dilam.. Aar tarpor ei post ta. Moja pelam khub!
ReplyDeleteAmi nije boi kinle khub ekta fele rakhi na. Sathe sathe pore na felle raat er ghum hoe na. Tobe gift e pawa boi ektu adhtu obohrlito hoe boiki!
eta khub bhalo habit. na joomiye rakha ta. ki boi kinli notun??
DeleteAmar to read list atooii lomba hoyeche....boi gulo lyaad khor hoye gache....guess abar ber korle ora bidhroho korbe
ReplyDeletehe he :P
DeleteAmar to read list atooii lomba hoyeche....boi gulo lyaad khor hoye gache....guess abar ber korle ora bidhroho korbe
ReplyDeletena na fele asis naa...
ReplyDeleteDarun. <3
ReplyDeleteIlli!
ReplyDelete